নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সকালে হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) ওই শিশু মারা যায় বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। এর আগে গত শুক্রবার বিকেলে নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ওই শিশুকে।
মারা যাওয়া শিশুর নাম মো. সোয়াদ (৭)। সে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার মো. সানোয়ারের ছেলে।
শিশুটির পরিবারের বরাত দিয়ে রামেক হাসপাতলের আইসিইউপ্রধান আবু হেনা মোস্তফা কামাল জানান, শুক্রবার সকালে খেজুরের কাঁচা রস খেয়েছিল সোয়াদ। এরপর জ্বর, খিচুনি ও অচেতন হয়ে পড়লে ওইদিনই বিকেলে রামেক হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। শনিবার সকালে শিশুটিকে আইসিইউতে রেফার্ড করা হয়। পরে চিকিৎসকদের সন্দেহ হলে নিপা ভাইরাসের পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়।
রোববার শিশুর শরীরে নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়। তবে তার আগে থেকেই শিশুটির অবস্থায় শঙ্কটাপন্ন ছিল। সোমবার সকালে চিকিৎসাধীনে মারা যায় সে।
রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী বলেন, “জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নিপাহ ভাইরাসের উপসর্গ নিয়ে রামেক হাসপাতালে জেলার গোদাগাড়ী উপজেলার এক নারী ভর্তি হয়েছিলেন। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। পরে ঢাকায় পরীক্ষার জন্য ওই নারীর সেম্পল পাঠানো হয়। গত ১১ জানুয়ারি রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) আয়োজিত ‘শীতকালীন সংক্রামক রোগ ও নিপাহ ভাইরাস সংক্রমণ’ শীর্ষক মেডিকেল সম্মেলনে জানানো হয়েছিল, রাজশাহীর ওই নারী নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।
“সোমবার এক শিশু নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ায় এ নিয়ে চলতি বছরেই নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে রাজশাহীতে দুজন মারা গেল। অথচ ২০২২ সালে নিপাহ ভাইরাসে তিনজন আক্রান্ত হয়েছিলেন। তাদের মধ্যে দুজন মারা যান। তাদের একজন ছিলেন নওগাঁর ও অন্যজন ফরিদপুরের। আর এবার বছরের শুরুতেই রাজশাহীতে দুইজন মারা গেলেন। তবে রাজশাহী ছাড়া দেশের অন্য কোথাও এবার নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।’
নিপাহ ভাইরাস থেকে বাঁচতে খেজুরের কাঁচা রস না খাওয়ার পরামর্শ দেন হাসপাতাল পরিচালক।