সজীব নন্দন দেব, সুনামগঞ্জ
প্রকাশ : ২৬ জানুয়ারি ২০২৩, ০৫:০৫ এএম
অনলাইন সংস্করণ

ভাঙছে সুরমা, বিলীন হচ্ছে জনপদ

ভাঙছে সুরমা, বিলীন হচ্ছে জনপদ

নদীভাঙনে নিঃস্ব হচ্ছে সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলার ১২ গ্রামের মানুষ। আতঙ্কে দিন কাটছে তাদের। গত কয়েক বছরে সুরমা নদীর ভাঙনে কয়েকশ পরিবার বাড়িঘর হারিয়েছেন। নদীতে বিলীন হয়েছে বিদ্যালয়, কবরস্থান, বাজার, মসজিদ ও আবাদি জমি। এখনো এসব গ্রামে ভাঙন অব্যাহত আছে। গ্রামের মানুষজন সব সময় ভয়ে থাকেন কখন নদীতে তলিয়ে যায় ভিটাবাড়িসহ শেষ সম্বলটুকু।

নদীভাঙনে হুমকির মুখে রয়েছে উপজেলার সাচনাবাজার ইউনিয়নের রামনগর, নূরপুর, সাচনাবাজার, জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ কামলাবাজ, নয়াহালট, চানপুর, সংবাদপুর, লালপুর, লক্ষ্মীপুর, জামালগঞ্জ উত্তর ইউনিয়নের উত্তর কামলাবাজ, সাচনা গ্রাম, ফেনারবাক ইউনিয়নের শরীফপুর, রামপুর, গজারিয়া, আলীপুর, আমানীপুরসহ ১২টি গ্রাম। সারা বছরই ভাঙছে নদী। তবে বর্ষা মৌসুমে ভাঙনের তীব্রতা আরও বাড়ে। এলাকাবাসী বলেন, নদীভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা না নেওয়া হলে নদীতে হারিয়ে যাবে ১২টি গ্রাম।

নূরপুর গ্রামের ৭৫ বছরের বৃদ্ধ আব্দুল বসির ও রইছ মিয়া জানান, বাড়ি ভাঙতে ভাঙতে জীবনটাই শেষ। আমার জীবনে নদীতে তিনবার বাড়ি ভাঙছে। এ ছাড়া ৩ বিঘার মতো আবাদি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে।

উপজেলার ফেনারবাক ইউনিয়নের আমানীপুর গ্রামের মৎস্যজীবী জয়মোহন বর্মণ (৭০) বলেন, কিছুদিন আগে আমার ভিটেমাটি সুরমা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এই নিয়ে আমি দুবার ভাঙনের শিকার হলাম। কিছু করার নেই, আমাদের নদীর পাড়ের মানুষের কপাল পোড়া। যতদিন বেঁচে আছি দেখি আর কতবার বাড়ি ভাঙতে পারে নদী।

ফেনারবাক ইউপি চেয়ারম্যান কাজল চন্দ্র তালুকদার বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৪ হাজার ৫০০ জিওব্যাগ ফেলে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করা হয়েছে। স্থায়ীভাবে গ্রাম রক্ষার জন্য ৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন। আশা করি, দ্রুতই কাজ সম্পন্ন হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সুনামগঞ্জ জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মামুন হাওলাদার জানান, জরুরি ভিত্তিতে ৫৬ লাখ টাকার জিও ব্যাগ ফেলে আপাতত আমানিপুর বাজার ও গ্রামটি রক্ষা করা হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্যের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের অর্থায়নে ইমার্জেন্সি অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রজেক্টের মাধ্যমে এই অর্থবছরে ৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার টেন্ডার হবে।

সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, দীর্ঘদিন জামালগঞ্জ উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম ভাঙনের শিকার। নদীভাঙনে মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। এরই মধ্যে আমানীপুর বাজারসহ গ্রামটিতে নদীভাঙন রোধে ইমার্জেন্সি ভিত্তিতে ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে জিওব্যাগ ফেলা হয়েছে। এ ছাড়া ৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার একটি প্রকল্পের কিছুদিনের মধ্যেই টেন্ডার হবে। এদিকে সাচনাবাজার, রামনগর, নূরপুরসহ নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলো রক্ষায় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

হাতি শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে আছাড় মারল কৃষককে

বাবার বাড়ি যাওয়ায় স্ত্রীকে ২৭টি কোপ দিলো স্বামী

সিলেটে ট্রাক-অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ২

ব্যারিস্টার খোকনের দলীয় পদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বিএনপি 

বাড়ি ফেরা হলো না বাবা-ছেলের

বাংলাদেশের দাবদাহ নিয়ে যা বলছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম

অনুষ্ঠিত হলো বিইউএইচএস -এর প্রথম সমাবর্তন

ইউরোপ ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে : ম্যাখোঁ

ছেলেদের দোষে ডুবছেন মাহাথির মোহাম্মদ

হিজাব আইন না মানায় ইরানে ব্যাপক ধরপাকড়

১০

তীব্র তাপপ্রবাহে বৃষ্টি চেয়ে হাজারো মুসল্লির কান্না

১১

মানব পাচারের দায়ে একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

১২

ঝিনাইদহে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন

১৩

কারিগরির ফাঁকা সনদ মিলল তোষকের নিচে, গ্রেপ্তার কম্পিউটার অপারেটর

১৪

ঝিনাইদহে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়

১৫

ভোট দিলে যে শহরে মিলবে ফ্রি বিয়ার, ট্যাক্সিসহ নানা সুবিধা

১৬

কুমিল্লায় পানিতে ডুবে ৪ শিশুর মৃত্যু

১৭

খালেদা জিয়ার সঙ্গে ফখরুলের সাক্ষাৎ

১৮

চট্টগ্রামে জব্বারের বলী খেলায় চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার বাঘা শরীফ

১৯

সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরলেন শিক্ষামন্ত্রী 

২০
*/ ?>
X