
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় লাউয়াছড়া বনে গতকাল শনিবার সন্ধ্যার দিকে আগুন লেগেছে। লাউয়াছড়ার ডরমিটরি লেকের উত্তর-পশ্চিম ও হিড বাংলাদেশের পশ্চিমে এ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ৮টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, আগুনে প্রায় এক একর জায়গা পুড়ে গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, লাউয়াছড়া বনের বাঘমারা ক্যাম্পের অধীনে বন বিভাগের স্টুডেন্ট ডরমিটরির উত্তর-পশ্চিম ও হিড বাংলাদেশের পশ্চিমে সন্ধ্যায় হঠাৎ আগুন দেখা যায়। এরপর আগুন আশপাশের প্রায় এক একর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় এলাকাবাসী ও বনকর্মীরা প্রায় দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের মৌলভীবাজার বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘সম্প্রতি বনের বাঁশ কাটার জন্য কিছু দুষ্কৃতকারীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। হয়তো তারা বনে বিচ্ছিন্নভাবে আগুন লাগিয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, বনের প্রায় এক একর জায়গা পুড়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।’
শ্রমিকরা বলছেন, বনে কীভাবে আগুন লেগেছে, এ ব্যাপারে আমরা কিছু জানি না। সন্ধ্যায় হঠাৎ আগুন দেখে আমরা নিয়ন্ত্রণে আনি।
কমলগঞ্জ জীববৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আহাদ মিয়া বলেন, ‘এর আগেও গত বছর লাউয়াছড়া বনে আগুন দেওয়া হয়েছিল। এবারও আগুন দেওয়া হয়েছে। আগুনে বন্যপ্রাণী ও পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতি হয়।’
লাউয়াছড়া বন রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘বনে কীভাবে আগুন লেগেছে, এ বিষয়ে জানি না। হয়তো সিগারেটের আগুন থেকে তা ছড়িয়ে পড়েছে। অথবা দুষ্কৃতকারীরা পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগিয়েছে। বনের কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা তদন্ত করে বলতে হবে।’
এর আগে ২০২১ সালের এপ্রিলে বনে আগুন লেগে প্রায় তিন একর এলাকা পুড়ে যায়।
বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ থেকে জানা গেছে, লাউয়াছড়ার জাতীয় উদ্যানে ৪৬০ প্রজাতির দুর্লভ উদ্ভিদ ও প্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে ১৬৭ প্রজাতির উদ্ভিদ, ৪ প্রজাতির উভচর, ৬ প্রজাতির সরীসৃপ, ২৪৬ প্রজাতির পাখি এবং ২০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে।