হাইকোর্টের আদেশে রাঙামাটিতে উচ্ছেদ অভিযানের দ্বিতীয় দিনে বাধার মুখেই বন্ধ হয়েছে জেলা প্রশাসনের উচ্ছেদ অভিযান। আজ বুধবার দুপুর ১২টায় জেলা শহরের ফিশারিঘাট বাস টার্মিনাল এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেন জেলা প্রশাসনের ম্যাজিস্ট্রেটরা।
রাঙামাটির সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমা বিনতে আমিনের নেতৃত্বে অভিযান শুরু হয়। অভিযানের শুরুতে তিনটি দোকান গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর জোরালো ক্ষোভ জানায় স্থানীয়রা। ঘটনাস্থলে এলাকার কাউন্সিলর জামাল উদ্দিন, সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর জোবায়তুন নাহারও উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বুধবার সকাল ১০টার দিকে এসে মৌখিকভাবে তাদের উচ্ছেদের কথা জানানো হয়েছে। ১২টার দিকে এসে ভাঙা শুরু করেছে। এই অল্প সময়ের মধ্যে তারা কিছুই সরাতে পারেনি। দোকানপাটগুলোর পেছনে স্থানীয়রা পরিবার নিয়ে বসবাস করেন। তারা এখন পরিবার পরিজন নিয়ে কোথায় যাবে।
স্থানীয় বাসিন্দা মিজান দাবি করেন , তার নিজের ভূমি নিয়ে মামলা চলমান কিন্তু প্রশাসন বিরোধপূর্ণ জায়গায় উচ্ছেদ চালাচ্ছে।
সদর ইউএনও নাজমা বিনতে আমিন বলেন, ‘মহামান্য হাইকোর্টের এক আদেশে আমরা উচ্ছেদ অভিযানে নেমেছি। একটি পিটিশনের ওপর হাইকোর্টের দেওয়া আদেশের ভিত্তিতে আমরা আদেশ বাস্তবায়ন করছি। যাদের জমির দলিল আছে তাদের দলিল দেখাতে বলেছি।’
এদিকে, ফিশারিঘাট টার্মিনালে তিনটি দোকান ভাঙার পরই স্থানীয়রা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন। পরে পরিস্থিতি সামাল দিতে ইউএনও দখলদারদের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করতে বলেন এবং ম্যাজিস্ট্রেটরা বাস টার্মিনাল এলাকা ত্যাগ করেন।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার জেলা শহরের আসাম বস্তি বাজার ও ব্রাহ্মণটিলা এলাকায় ৫টি দোকান, ৪টি বসতঘর ও একটি নির্মাণাধীন পাকা অবকাঠামো গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর একটি রিটের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের একমাত্র কৃত্রিম জলাধার রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে অবৈধভাবে দখল বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে দুই সপ্তাহের মধ্যে কাপ্তাই হ্রদে আর যেন কোনো মাটি ভরাট বা স্থাপনা নির্মাণ না করা হয় সে ব্যাপারে কার্যকরি ব্যবস্থা নিতে রাঙামাটি জেলা প্রশাসক (ডিসি) এবং পুলিশ সুপারসহ (এসপি) সংশ্লিষ্টদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
পাশাপাশি অপর এক আদেশে কাপ্তাই হ্রদের জরিপ করে অবৈধ দখলদারদের তালিকা তৈরি করে ৩০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে বলা হয়েছে। হাইকোর্টের আদেশ মোতাবেক কাপ্তাই হ্রদে অবৈধ দখল বন্ধে উচ্ছেদ অভিযান হচ্ছে- এমনটাই জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।