দিনাজপুর পৌর শহরের লিলির মোড় এলাকার একই বাড়ি থেকে স্বামী-স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে বাড়িটির শোবার ঘরে স্বামীর ঝুলন্ত লাশ এবং রান্নাঘর থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় স্ত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ দুটি উদ্ধার করে।
নিহত দুজন হলেন দিনাজপুর সদর উপজেলার পশ্চিম বালুয়াডাঙ্গা এলাকার মৃত রহিম উদ্দিনের ছেলে মজিবর রহমান (৬৫) ও তার স্ত্রী সুরাইয়া বেগম (৪৫)। ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে এ দম্পতি ওই বাড়ির কেয়ারটেকারের দায়িত্ব পালন করছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতের কোনো এক সময় ওই দম্পতির মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা পুলিশের।
ওই বাড়ির মালিক আইনজীবী নীলুফার রহমান। তিনি পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন। পুলিশ জানায়, ওই বাড়ির পাশেই লুৎফুন্নেছা টাওয়ার নামে একটি বিপণিবিতান আছে। এই বিপণিবিতানের তত্ত্বাবধায়ক শফিকুল ইসলামসহ মজিবর ও তার স্ত্রীকে বাড়ি দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন নীলুফার। গতকাল রাত ১২টার দিকে নীলুফার একাধিকবার মজিবরের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। মজিবরকে না পেয়ে তিনি শফিকুলকে কল দিয়ে মজিবরের খোঁজ নিতে বলেন।
পরে শফিকুল ওই বাড়িতে গিয়ে শোবার ঘরে মজিবর রহমানকে ঝুলন্ত এবং রান্নাঘরের মেঝেতে মজিবরের স্ত্রী সুরাইয়াকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন। পরে নীলুফারকে মুঠোফোন বিষয়টি অবহিত করেন শফিকুল। খবর পেয়ে আজ সকালে কোতোয়ালি থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশটি উদ্ধার করে।
মজিবরের একমাত্র ছেলে সিরাজুল ইসলাম (৩৪) সংবাদমাধ্যমকে জানান, তার মা-বাবা দীর্ঘদিন ধরে ওই বাড়ি দেখাশোনার দায়িত্ব পালন করছেন। তবে তিনি পরিবার নিয়ে শহরের পশ্চিম বালুয়াডাঙ্গা এলাকায় থাকেন। মাঝেমধ্যেই তিনি মা-বাবার সঙ্গে দেখা করতে এই বাড়িতে আসতেন। সবশেষ এক সপ্তাহ আগে তিনি দেখা করে গেছেন।
দিনাজপুর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোমিনুল করিম বলেন, ঘটনাস্থল থেকে মজিবর রহমানের লাশ ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে। এ ছাড়া তার স্ত্রীর মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। ভারী কোনো বস্তু দিয়ে ওই নারীর মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়েছে। শোবার ঘরের সবকিছুই গোছানো অবস্থায় পাওয়া গেছে। আলামত সংগ্রহ শেষে লাশ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত করছে।