নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে শুরু হয়েছে তিন দিনের বউমেলা। উপজেলার পৌরসভার ভট্টপুর এলাকার জয়রামপুরে আদি বটবৃক্ষের তলায় শুরু হয়েছে এ মেলা।
স্বামী-সংসারের মঙ্গল কামনায় পূজা দিতে দূরদূরান্ত থেকে এখানে আসেন হাজারো নারী। প্রতি বছর বৈশাখ মাসের ২ তারিখ এখানে মেলা বসে। এ বছর রমজানে পড়ায় আয়োজনের পরিধি ছিল সীমিত।
জানা গেছে, মেলাকে কেন্দ্র করে উপজেলার ভট্টপুর, জয়রামপুর, ষোলোপাড়া, পানামসহ আশপাশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী পরিবারে উৎসবের আমেজ দেখা দেয়। মেলার দ্বিতীয় দিনের সকালেও প্রথম দিনের ন্যায় বর্ণিল সাজে নানা বয়সি নারীদের বটতলায় অপেক্ষা করতে দেখা গেছে। বেলা গড়িয়ে দুপুর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ভিড়। ভোগের জন্য অনেকেই ঝুড়ি ভর্তি করে নিয়ে এসেছেন নানা মৌসুমী ফল। তারা সারিবদ্ধ হয়ে পূজা দেওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন।
মোগরাপাড়া থেকে মেলায় আসা কবিতা রানী বলেন, ‘সংসারের সুখ-শান্তি ও স্বামী-সন্তানের মঙ্গল চেয়ে পূজা দিতে এসেছি। একই এলাকার রঞ্জিতা দাস ও শিতুলী রানী পালের ভাষ্য, এখানে পূজা-অর্চনা দিলে স্বামী-সন্তান ও সংসারের মঙ্গল হয় বলে পরিবারের জ্যেষ্ঠ সদস্যদের কাছে শুনেছেন। তাই অন্যদের সঙ্গে তারাও এসেছেন।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো বটবৃক্ষটি সিদ্ধেশ্বরী দেবী নামে পরিচিত। এখানে তার সন্তুষ্টির জন্য কবুতর ওড়ানো ও পাঁঠা বলিও দেওয়া হয়।
কৃষ্ণপুরার বাসিন্দা পুরোহিত চন্দন ভট্টাচার্য বলেন, সকালে আনুষ্ঠানিকভাবে পূজা-অর্চনা হয়। এর মাধ্যমে মেলা শুরু করেন। পূজা-অর্চনা একদিনের হলেও মেলা চলে তিন দিন। বউ মেলায় সকাল থেকে নানা এলাকার নারীরা ভিড় জমায়। বউমেলায় স্বামী-সংসারের মঙ্গল কামনায় মৌসুমী ফলের ভোগ সাজিয়ে পূজার অপেক্ষায় নারীরা। হিন্দু ধর্মাবলম্বী নারীপ্রধান আয়োজন হলেও সব মানুষ মেলায় নানা জিনিস কিনতে আসেন।
মেলায় দারু ও মৃৎশিল্পীদের তৈরি নানা বর্ণের টেপা পুতুল, হাতি, ঘোড়া, ময়না, টিয়া, বাঘ-ভালুক, হাঁড়ি-পাতিল ও মণ্ডা-মিঠাই সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা।
সিদ্ধেশ্বরী বটতলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি মানিক ঘোষ বলেন, সবার সহযোগিতায় এবার বউমেলায় পূজা অনুষ্ঠান শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রেজওয়ান উল ইসলাম বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে বউমেলায় নিরাপত্তা জোরদারে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।