
বগুড়ায় ভাত চুরির অপরাধে সাব্বির হোসেন (২৩) নামের এক যুবককে হাত-পা বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। গত সোমবার রাতে সদর উপজেলার নিশিন্দারা ইউনিয়নের বারপুর লালিপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এরই মধ্যে এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, লাঠি দিয়ে এলাকার কয়েকজন তাকে নির্যাতন করছেন। প্রথমে তাকে টেনেহিঁচড়ে মাটিতে ফেলে দেওয়া হয়। এরপর লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়।
নির্যাতনের এক পর্যায়ে তাকে দড়ি দিয়ে পিঠমোড়া করে বাঁধা হয়। সেই সঙ্গে দুই পা বেঁধে রাখা হয়। এ সময় বারবার সাব্বির মাফ চাইলেও তাকে ক্ষমা করা হয়নি। ঘণ্টাব্যাপী তাকে নির্যাতন করা হয়।
তবে এ ব্যাপারে নির্যাতনকারীরা সরাসরি কোনো মন্তব্য না করলেও তারা দাবি করেন, ভাত চুরির চেষ্টা করায় তাকে মারা হয়েছে। সে নেশাগ্রস্ত।
তবে সাব্বিরের স্বজনরা দাবি করেন, ক্ষুধার জ্বালায় সে একটি বাড়িতে রান্নাঘরের জানালা দিয়ে ভাত চুরির চেষ্টা করেছিল। এ জন্য তাকে বেঁধে রেখে এমনভাবে নির্যাতন করা হয়।
আলোচিত এ ঘটনা নিয়ে এলাকাবাসী জানান, বারপুর লালিপাড়া এলাকার একটি বাড়ির দোতলার রান্নাঘরের জানালা দিয়ে ভাত চুরির চেষ্টা করছিল সাব্বির। এ সময় বাড়ির লোকজন দেখতে পেয়ে চিৎকার করলে সে পালানোর চেষ্টা করে। পরে স্থানীয় লোকজন ধাওয়া করে আটক করে। আটকের পর তার হাত-পা বেঁধে এক ঘণ্টা ধরে নির্যাতন করা হয়।
এ ব্যাপারে নিশিন্দারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম জানান, চোর সন্দেহে সাব্বিরকে নির্যাতন করা হয়েছে। তিনি বলেন, এভাবে নির্যাতন করা ঠিক হয়নি। নির্যাতন না করে তারা তাকে পুলিশের কাছে দিতে পারত।
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) স্নিগ্ধ আখতার জানান, সাব্বিরের নির্যাতনের ভিডিও দেখে তিনি মর্মাহত। পশুকেও এমনভাবে কেউ নির্যাতন করে না। নির্যাতনের সময় তার নাক ও মুখে পানি ঢেলে দেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, নির্যাতনকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে। তবে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ব্যাপারে কেউ মামলা দায়ের করেনি।