শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
প্রকাশ দাস, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
প্রকাশ : ২৩ জানুয়ারি ২০২৩, ০৮:১৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বিএনপির বহিষ্কৃত সাত্তারকে জেতাতে কোমর বেঁধে নেমেছে ‘আওয়ামী লীগ’

বিএনপির বহিষ্কৃত সাত্তারকে জেতাতে কোমর বেঁধে নেমেছে ‘আওয়ামী লীগ’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) উপনির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়ার পক্ষে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগ। বিভিন্ন এলাকায় উঠান-বৈঠকসহ স্বতন্ত্র প্রার্থী উকিল সাত্তারের নির্বাচনী প্রতীক কলার ছড়ির পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে করছেন মিছিল, মিটিংসহ কর্মী সমাবেশ। চাইছেন ভোট। মিছিলে মিছিলে সরগরম করে তুলছেন নির্বাচনী ময়দান।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা সাত্তারের নিজ ইউনিয়নে ব্যাপক প্রচার চালিয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। এ সময় তাদের পাশে উকিল সাত্তার উপস্থিত না থাকলেও তার ছেলে মাইনুল ইসলাম তুষার সঙ্গে থাকছেন। বিগত দিনের রাজনৈতিক মতাদর্শ যেন এক নিমিশেই গুলিয়ে গেছে। একে অপরের হাত ধরে নেমেছেন প্রচারণায়, চাইছেন ভোট।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) উপনির্বাচনে বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা উকিল আব্দুস সাত্তার ভূঁইয়ার পক্ষে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগ। বিভিন্ন এলাকায় উঠান-বৈঠকসহ স্বতন্ত্র প্রার্থী উকিল সাত্তারের নির্বাচনী প্রতীক কলার ছড়ির পোস্টার ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে করছেন মিছিল, মিটিংসহ কর্মী সমাবেশ। চাইছেন ভোট। মিছিলে মিছিলে সরগরম করে তুলছেন নির্বাচনী ময়দান।

বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা সাত্তারের নিজ ইউনিয়নে ব্যাপক প্রচার চালিয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। এ সময় তাদের পাশে উকিল সাত্তার উপস্থিত না থাকলেও তার ছেলে মাইনুল ইসলাম তুষার সঙ্গে থাকছেন। বিগত দিনের রাজনৈতিক মতাদর্শ যেন এক নিমিশেই গুলিয়ে গেছে। একে অপরের হাত ধরে নেমেছেন প্রচারণায়, চাইছেন ভোট।

এক্ষেত্রে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড থেকেও রয়েছে গ্রিন সিগন্যাল। জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দরা বলছেন, যেহেতু এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী নেই এবং সাত্তার সাহেব একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী, সেজন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা দলমত নির্বিশেষে স্বাধীনভাবে তাকে সমর্থন জানিয়েছে। এদিকে আশুগঞ্জ ও সরাইলে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের আয়োজনের সাত্তার সমর্থক গোষ্ঠীর ব্যানারে কর্মী সমাবেশেরও আয়োজন করা হয়েছে। যদিও দলত্যাগী উকিল সাত্তারের পক্ষে আওয়ামী লীগের সরাসরি অবস্থান নেওয়াকে ভালো চোখে দেখছে না কেন্দ্রীয় বিএনপিসহ জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। তাদের মতে আওয়ামী লীগ সাত্তার উকিলকে সমর্থন করার মধ্যদিয়ে নিজেদের দেউলিয়াত্বের প্রমাণ দিয়েছে। সম্প্রতি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা এক সভায় বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিএনপির সংসদ সদস্যদের পদত্যাগকে বিতর্কিত করতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনে আব্দুস সাত্তারকে দাঁড় করিয়েছে।

এদিকে সোমবার বিকেলে আশুগঞ্জ উপজেলায় পাওয়ার স্টেশন ট্রেনিং সেন্টারে বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা ও ৫ বারের সাবেক এমপি আব্দুস সাত্তারকে নির্বাচনে বিজয়ী করতে এবং তার পক্ষে কাজ করতে নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়ে কর্মী সমাবেশ করেছে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ। আব্দুস সাত্তার ভুইয়া সমর্থক গোষ্ঠীর ব্যানারে আয়োজিত কর্মী সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজি ছফিউল্লাহ মিয়া। এতে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহম্মদ হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার, জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি তাজ মো. ইয়াছিন, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মঈন উদ্দিন মঈনসহ জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ডাকসাইটে নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সকল পর্যায়ের বিপুলসংখ্যক নেতৃবৃন্দকে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ সময় দলের সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা সৎ ও যোগ্য প্রার্থী হিসেবে উকিল আব্দুস সাত্তার ভুইয়ার পক্ষে কাজ করতে এবং তাকে জয়ী করতে আহ্বান জানান। এদিকে আগামীকাল ২৪ জানুয়ারিও আব্দুস সাত্তার সমর্থক গোষ্ঠীর ব্যনারে তার সমর্থনে সভার আয়োজন করা হয়েছে।

এ ছাড়াও সম্প্রতি অরুয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. আবু তালেব অরুয়াইল বাজারসহ বিভিন্ন আশপাশ এলাকায় উঠান বৈঠক করে সাত্তার উকিলের পক্ষে ভোট চেয়েছেন। সে সঙ্গে রোববার বিকেলে অরুয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাবেদ আল হাসানের নেতৃত্বে উকিল সাত্তারের ছেলে মাইনুল ইসলাম তুষারকে সঙ্গে নিয়ে একটি মিছিল পাকশিমুল ইউনিয়ন হয়ে অরুয়াইল বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। এতে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগসহ যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এ সময় তারা কলার ছড়ি প্রতীকের ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ডসহ কলার ছড়ি হাতে নিয়ে মিছিলে মেতে উঠেন। তারা কলা কলা স্লোগানে মাতিয়ে তুলেন নির্বাচনী ময়দান।

অরুয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাবেদ আল হাসান জানান, যেহেতু আমাদের দলীয় প্রার্থী নেই সে কারণে এলাকার সন্তান হিসেবে আমরা তার পক্ষে কাজ করছি। মানুষের দ্বারে দ্বারে ভোট চাইছি।

এ বিষয়ে, অরুয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু তালেব জানান, এলাকার মুরুব্বি ও সম্মানীয় ব্যক্তি। তিনি এখন স্বতন্ত্র প্রার্থী। তিনি একজন সৎ ও ভালো মানুষ হওয়ায় আমরা আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা এবং জনসাধারণও তার সমর্থনে কাজ করছে। দল থেকে আমাদের ওপর কোনো চাপ নেই।

সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট নাজমুল হোসেন জানান, এ আসনটিতে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী নেই। আর সাত্তার সাহেব একজন একনিষ্ঠ সৎ মানুষ। তাই উপজেলা আওয়ামী লীগসহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ দলের নেতাকর্মীরা স্বেচ্ছায় উনার জন্য মাঠে কাজ করছেন। মঙ্গলবার বিকেলে সাত্তার সমর্থক গোষ্ঠীর ব্যানারে আমরা একটি সভারও আয়োজন করেছি।

এদিকে উকিল আব্দুস সাত্তারের পক্ষে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের সমর্থনের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হাফিজুর রহমান মোল্লা কচি জানান, দল ও দেশের জনগণের সঙ্গে বিশ্বাস ঘাতকতা করে সাত্তার সাহেব নিজেকে জাতীয় বেইমান হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। তার এ বিশ্বাসঘাতকতার মধ্যদিয়ে তার সকল অর্জন ধুলিসাৎ হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, তাকে সমর্থন ও নির্বাচনে সার্বিক সহযোগিতার জন্য মাঠে নেমে আওয়ামী লীগ তাদের দেউলিয়াত্বের প্রমাণ দিয়েছে। বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি আদায় না হবে আন্দোলন চলমান থাকবে।

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার বলেন, গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে এবং সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের জন্য আমরা ভোটাধিকার প্রয়োগ করব। উকিল সাত্তার সৎ ও পাঁচ বারের এমপি হওয়ায় সকল নেতাকর্মীরা তাকে স্বাধীনভাবে স্বেচ্ছায় সমর্থন করছে।

এ বিষয়ে আব্দুস সাত্তারের ছেলে মাইনুল ইসলাম তুষার জানান, এবার জনগণের কাছ থেকে যে সাড়া পাচ্ছি, তা বিগত কোনো সময়েই হয়নি। এবার আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টিসহ দলমত নির্বিশেষে সকল মানুষের কাছ থেকে সাড়া পাচ্ছি। যেহেতু আমার বাবা স্বতন্ত্র প্রার্থী তাই সকলে উনার সমর্থনে এগিয়ে এসেছেন। এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের সমর্থন ও উকিল সাত্তারের পক্ষে কাজ করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাবা স্বতন্ত্র প্রার্থী। যদি বিএনপির প্রার্থী হতেন তাহলে তো আর আওয়ামী লীগ সমর্থন করত না। এখন যেহেতু স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগও উনার পাশ রয়েছেন এতে ভালো লাগারই কথা।

উল্লেখ্য, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২-(সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচন। এই আসনটি উন্মুক্ত রেখেছে আওয়ামী লীগ। উপনির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন বিএনপি থেকে পদত্যাগকারী এই আসনের ৫ বারের সাবেক এমপি উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া। তিনি দলীয় সিদ্ধান্তে গত ১১ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পাবলিশহার এক্সেলেন্স অ্যাওয়ার্ড পেলেন মিতিয়া ওসমান

৮৪ জন গ্রাউন্ড সার্ভিস এসিস্টেন্ট নিয়োগ দিল বিমান

প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের শাড়ি বন্ধুদের দিলেন ব্যারিস্টার সুমন

‘নতুন প্রজন্মের মাঝে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের তাৎপর্য তুলে ধরার আহ্বান’

লক্ষ্য যাত্রী সেবার মানোন্নয়ন  / ৮৪ জন গ্রাউন্ড সার্ভিস অ্যাসিস্ট্যান্ট নিয়োগ দিল বিমান

নওগাঁয় সিআইডি পরিচয়ে চাঁদাবাজি, অতঃপর...

ইন্দোনেশিয়ায় অগ্ন্যুৎপাতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে ১১ হাজার মানুষকে

প্রবাসীদের রেমিট্যান্স উন্নয়নের অন্যতম মূল চালিকা শক্তি : দীপু মনি

প্রচণ্ড তাপদাহে অগ্নি দুর্ঘটনা প্রতিরোধে যা করবেন

মেঘনায় জাটকা ধরায় ২০ জেলে আটক

১০

হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠক / বিএনপির কৌশল বুঝতে চায় ব্রিটেন

১১

মদ বিক্রেতার হামলায় আহত হয়ে মন্দিরের প্রতিমা ভাঙচুর

১২

যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষক রিমান্ডে 

১৩

বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে অভিবাসী পাচারের অভিযোগে গ্রেপ্তার ২৪

১৪

সাভারে গ্যাস বিস্ফোরণে দগ্ধ ৩

১৫

বিএনপি-জামায়াত দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে : লিটন

১৬

শিল্প এবং সংস্কৃতির উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে : তথ্যপ্রতিমন্ত্রী 

১৭

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গলা কেটে হত্যা

১৮

বিরিশিরিতে নয়নাভিরাম সৌন্দর্যে মোড়ানো সাদা মাটির পাহাড়

১৯

জামানত বৃদ্ধি উপজেলা নির্বাচনকে অর্থহীন করে তুলবে : গণতন্ত্র মঞ্চ

২০
*/ ?>
X