কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, স্বামী গ্রেপ্তার

আয়েশা জান্নাত নদী।
আয়েশা জান্নাত নদী। ছবি : সংগৃহীত

রাজশাহী মহানগরীতে এক কলেজছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার সকালে নগরীর তেরখাদিয়া এলাকা থেকে গলায় ফাঁস অবস্থায় তার লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় একজনকে আটক করা হয়েছে।

নিহত আয়েশা জান্নাত নদী (২১) রাজশাহী মহিলা কলেজে বাংলায় অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। নদীর পরিবারের দাবি, নদীকে নির্যাতন করে বালিশচাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, মাত্র দেড় বছর আগে বগুড়ার সান্তাহার এলাকার সারোয়ার হোসেনের ছেলে সজিবের সঙ্গে নদীর বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নদীর শর্ত ছিল তিনি লেখাপড়া করবেন। কিন্তু বিয়ের পর থেকেই তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন লেখাপড়ায় বাধা দেন। পড়ালেখা বন্ধ করতে শুরু করে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। একপর্যায়ে ছয় মাস আগে রাগ করে মায়ের বাড়ি চলে যান নদী। এরপর আবারও বুঝিয়ে নদীকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠানো হয়।

নদীর মা আঞ্জুয়ারা বেগম বলেন, ‘মাত্র সাত বছর বয়সে নদী বাবা হারান। এরপর গোলাম মোস্তফাকে আমি বিয়ে করি। নদী আমাদের সঙ্গেই থাকত। কিন্তু গরিবের সংসার। আমি সামান্য বেতনে আয়ার চাকরি করি। এ কারণে নদী টিউশনি করে নিজের লেখাপড়ার খরচ চালাত। সে রাজশাহী মহিলা কলেজে বাংলায় অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিল। স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া শেষ করে শিক্ষক হবে। কিন্তু তার আগেই তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করল। তার গলাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।’

আয়েশা জান্নাত নদী।
রাজশাহীতে এবার নিপাহ ভাইরাসে শিশুর মৃত্যু

এ বিষয়ে আরএমপির রাজপাড়া থানার ওসি সিদ্দিকুর রহমান কালবেলাকে জানান, নদীর মৃত্যুর ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচণার অভিযোগে তার সৎ বাবা মামলা করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে সজিবের বিরুদ্ধে নদীর ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের প্রমাণ পেয়েছেন তারা। এ কারণে তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ওসি আরও জানান, নদীর লাশ ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরই তার মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। তার লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com