
বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামের ভেন্যু বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে কাফনের কাপড় গায়ে আমরণ অনশন শুরু করেছেন এক যুবক। আজ রোববার সকাল ৯টার দিকে শহরের সাতমাথায় এই অনশন শুরু করেন তিনি।
অনশন শুরু করা হুমায়ুন আহম্মেদ রুমেল (৪০) বগুড়া শহরের নাটাইপাড়া এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মৃত জালাল উদ্দিনের ছেলে। তিনি চ্যানেল বগুড়া নামে ফেসবুক পেজের কন্টেন্ট ক্রিয়েটর।
আজ সকাল ১০টার দিকে শহররে সাতমাথা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গায়ে কাফনের কাপড় পরে ফুটপাতে বিছানা পেতে অনশনে বসেছেন রুমেল। তার পেছনে টানানো ব্যানারে লেখা ‘বগুড়া জেলার উন্নয়ন এবং বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম ভেন্যু (ক্রিকেট) বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে আমরণ অনশন’। বুকে ঝুলানো প্ল্যাকার্ডেও এই বার্তা লেখা। অনশনরত এই যুবককে দেখতে অনেকেই তার চারপাশে ভিড় করেছেন।
জানতে চাইলে রুমেল বলেন, ‘বগুড়াবাসী দীর্ঘদিন ধরে উন্নয়নবঞ্চিত। এই সরকারের সময় এখানে উল্লেখযোগ্য কোনো উন্নয়ন হয়নি। তবুও সান্ত্বনা ছিল, একটি স্টেডিয়াম আর বিমানবন্দর আছে। একসময় এখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ হতো। কিন্তু ১৬ বছর ধরে এখানো আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয় না। গত বৃহস্পতিবার বিসিবি তাদের জনবল ও খেলার সরঞ্জাম প্রত্যাহার করেছে। খেলার মাঠে একটি দড়ি ছিল, সেই দড়িও তারা নিয়ে গেছে। এখন আনুষ্ঠানিকভাবে এই স্টেডিয়ামের মৃত্যু হয়েছে। বিমানবন্দরও বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার হয় না। তাহলে এখানে আর কী অবশিষ্ট থাকল। তিনি আরও বলেন, সরকার দাবি না মানা পর্যন্ত আমি আমরণ অনশন করেই যাব।’
এর আগে বিসিবির এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে গতকাল শনিবার শহরের সাতমাথায় বগুড়াবাসী ব্যানারে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ ছাড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে চলমান প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের খেলায় অংশ নেওয়া খেলোয়াড়েরাও বিসিবির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতীকী প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন।
উল্লেখ্য, ২০০৬ সালের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক ভেন্যুর মর্যাদা পায় বগুড়ার শহীদ চান্দু স্টেডিয়াম। পরের মাসেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক অভিষেকও হয়ে যায় ওই সময়ে দেশের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন স্টেডিয়ামটির। কিন্তু ওই বছরেরই ডিসেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নির্বাসনে চলে যায় স্টেডিয়ামটি। ২০০৬ সালের পর থেকে এখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ না হলেও জাতীয় লীগ, যুব ক্রিকেট লিগ, প্রিমিয়ার ও প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগ এবং করপোরেট লিগের ম্যাচ হয়েছে এ মাঠে। এ ছাড়া হয়েছে জাতীয় দলের অনুশীলন ক্যাম্পও।