ফেনীর সোনাগাজী উপজেলায় আওয়ামী লীগ নেতার অপকর্মের প্রতিবাদ করায় খুন হতে পারেন- এমন আশঙ্কা জানিয়ে ফেসবুকে একাধিক স্ট্যাটাস ও ভিডিও পোস্ট করা যুবলীগের এক নেতার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে নিজের শয়নকক্ষ থেকে তারা লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তবে সেই সময় তার দুই পা মাটিতে ছিল।
ওই যুবলীগ নেতার নাম মোকসুদ আলম বিপ্লব। তিনি সোনাগাজী সদর ইউনিয়নের সুজাপুর গ্রামের নুরুল আলম খোকা মিয়ার ছেলে। ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের পদে ছিলেন বিপ্লব।
বিপ্লবের ভাবি রুমা আক্তার বলেন, ‘আামার মেয়ে বিপ্লবকে দুপুরে খাওয়ার জন্য ডাকতে গেলে কোনো সাড়া শব্দ না পেয়ে জানালায় উঁকি দিয়ে তার গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় দেখতে পায়। তার চিৎকারে আমরা ছুটে গিয়ে তাকে ঝুলন্ত দেখতে পেয়ে পাড়া-প্রতিবেশীকে ডেকে আনি।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘সে আত্মহত্যা করতে পারে না, তাকে হত্যা করা হয়েছে।’
জানা গেছে, মৃত্যুর আগে বিপ্লব ফেসবুকে তাকে হত্যার পরিকল্পনার জন্য সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রফিকুল ইসলামকে দায়ী করেন। ফেসবুক লাইভ ও ভিডিও বার্তায় বিপ্লবকে বলতে শোনা গেছে, রফিক তাকে মাদকের মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছেন। তিনি মিথ্যা মামলা ও রফিকের অপকর্মের প্রতিবাদ করায় তাকে হত্যার পর লাশ গুম করার পরিকল্পনা করছেন। তার যদি মৃত্যু হয় সেজন্য রফিক দায়ী থাকবেন জানিয়ে আওয়ামী লীগ ও প্রশাসনের কাছে প্রতিকার চেয়েছেন তিনি।
সোনাগাজী থানা প্রাঙ্গণে বিপ্লবের স্ত্রী আকলিমা আক্তার বলেন, তার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। এ জন্য আওয়ামী লীগ নেতা রফিকুল ও তার সহযোগী নাজিমকে দায়ী করেন তিনি।
তিনি বলেন, রফিক তার স্বামীকে হত্যার জন্য বহু চেষ্টা করেছেন। জীবন বাঁচাতে বিপ্লব আত্মগোপন করেও রক্ষা পাননি।
আকলিমা আরও বলেন, ‘আমি বাবার বাড়িতে ছিলাম, সকালেও তার সঙ্গে কথা হয়েছে। আমার জন্য বাজার ও টাকা পাঠিয়েছে। দুপুরের পর জানতে পারলাম তাকে হত্যা করা হয়েছে।’ এ ঘটনায় তিনি রফিকের বিরুদ্ধে মামলা করবেন বলে জানান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সোনাগাজী সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের একাধিক নেতা বলেন, রফিক ইউনিয়নে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। তার স্ত্রী উম্মে রুমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে রফিক আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। ভয়ে তার বিরুদ্ধে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পান না। প্রতিবাদ করেই বিপ্লবকে মরতে হয়েছে।