
মাদারীপুরের শিবচরে ভয়াবহ বাস দুর্ঘটনার আগে ও পরে পরিস্থিতি কেমন ছিল তার বর্ণনা দিয়েছেন বাসের আহত যাত্রী এবং ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা। তাদের কথায়, হঠাৎ বিকট শব্দ হওয়ার পর বাসটি খাদে পড়ে যায়। বাসের যাত্রীদের চিৎকার-আর্তনাদে ভারি হয়ে ওঠে সেখানকার পরিবেশ।
আহত যাত্রী কামাল মিয়া বলেন, ‘ভাঙ্গা থেকে ঢাকা যাওয়ার উদ্দেশে ইমাদ পরিবহনে উঠি। গাড়ি ভর্তি লোক ছিল। আমার একটু ঘুম ঘুম আসছিল। হঠাৎ বিকট শব্দ হইয়া আমাদের গাড়িটা পইড়া গেল। তাৎক্ষণিক মনে হইছে আমি পৃথিবীতে বেঁচে নাই। আমারে আল্লায় বাঁচাইছে।’
প্রত্যক্ষদর্শী রাইসুল হাওলাদার বলেন, ‘আমি হাইওয়ের পাশের ক্ষেতে রসুন তুলছিলাম। হঠাৎ করে বিকট শব্দ শুনতে পাই। সাথে সাথে তাকাইয়া দেখি একটা গাড়ি পইড়া গেছে। অনেক মানুষ বাবা গো মাগো কিইয়া কানতাছে। কাছে গিয়ে দেখি লাশ আর লাশ, গাড়িটাও ভাইঙা গেছে।’
আজ রোববার সকালে শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় ঢাকাগামী ইমাদ পরিবহনের ওই বাস দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত নিহত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ জনে। আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। শিবচর হাইওয়ে পুলিশের ওসি আবু নাঈম মো. মোফাজ্জেল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে, সকালে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের বাসটি পদ্মা সেতুর আগে এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ে যায়। এ সময় বাসটির সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। খবর পেয়ে জাজিরা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে হতাহতদের উদ্ধার করেন।
জাজিরা ফায়ার স্টেশনের সাব অফিসার শেখ আবুল হাসেম বলেন, ‘বাসের মধ্য থেকে ১৪ জনের মরদেহ উদ্ধার করেছি। হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। লাশগুলো শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রাখা হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
এদিকে, এ ঘটনায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এডিসি পল্লব হাজরার নেতৃত্বে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী দুদিনের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া নিহতদের পরিবারকে ২০ হাজার এবং আহতদের ৫০০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুন।