২৭ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএমে ভোট গ্রহণ হবে। এজন্য গতকাল শুক্রবার প্রতি ওয়ার্ডের একটি কেন্দ্রে মক ভোটিংয়ের (ভোট দেওয়ার প্রশিক্ষণ) আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। কিন্তু এতে আগ্রহ নেই ভোটারদের। নগরীর বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, ভোট নিতে আসা কর্মকর্তারা অলস সময় পার করছেন। কেউ রোদে বসে, কেউ পাশাপাশি বসে খোশগল্পে মেতেছেন।
নগরীর ২০ নম্বর ওয়ার্ডের আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে যায়, এই কেন্দ্রে মক ভোটের জন্য তিনটি মেশিন বসানো হয়েছে। এজন্য কর্মকর্তা আছেন ১০ জন। কিন্তু সকাল ৮টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত এখানে ইভিএম মেশিনে ভোট দেওয়া শিখতে এসেছেন মাত্র ২৩ জন। এই কেন্দ্রে ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৯৩৬ জন।
নগরীর ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা ১০ হাজার ৩১ জন। এই ওয়ার্ডে ভোটারদের জন্য মক ভোটিং কেন্দ্র করা হয়েছে লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজে। মেশিন বসানো হয়েছে ৬টি। দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত এই কেন্দ্রে এসেছেন মাত্র ছয়জন। ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য মক ভোটিং কেন্দ্র করা হয়েছে সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজে। এখানেও সাতটি মেশিন বসানো হয়েছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ভোটার এসেছেন ৯ জন। তারা কীভাবে এই মেশিনে ভোট দিতে হয় সেই প্রশিক্ষণ নিয়ে গেছেন।
এই কেন্দ্রর ডাটা এন্ট্রি অপারেটর পল্লব দাস জানান, এই ৯ জন ছাড়াও আরও কয়েকজন এসেছেন খোঁজ নিতে। ভোট দিতে হলে ন্যাশনাল আইডি কার্ড বা স্মার্ট আইডি কার্ড প্রয়োজন। যারা এই দুটির একটিও আনেননি তারা এমনিতেই দেখে গেছেন কীভাবে ভোট দিতে হবে।
মক ভোট নিতে আসা এক ট্রাবল শুটার বলেন, এই মেশিনে ভোট দেওয়া যতটা সহজ, ততটাই কঠিন। কারণ, আগে থেকে অধিকাংশ ভোটারই জানেন না, কীভাবে ভোট দিতে হবে। তিনি যে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন, সেটাও মেশিনের একটি বাটনে চাপ দিয়ে কনফার্ম করতে হবে। আগে থেকে জানা না থাকলে ভোটের দিন বিড়ম্বনায় পড়তে হবে।
রংপুর আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস সূত্র জানিয়েছে, এর আগে ২০১৭ সালের রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পরীক্ষামূলকভাবে একটি কেন্দ্রে ইভিএম মেশিনে ভোট গ্রহণ করা হয়েছিল।
মক ভোটিংয়ের বিষয়ে জানতে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেনকে ফোন করা হলে তিনি ব্যস্ত দেখিয়ে লাইন কেটে দেন।
মোটরসাইকেলের পাস পাচ্ছেন না সাংবাদিকরা: নির্বাচনে সাংবাদিকদের জন্য মোটরসাইকেল ব্যবহারে অনুমতি দিচ্ছে না নির্বাচন কমিশন। একই সঙ্গে কোনো সংবাদকর্মী ভোটকেন্দ্রে ১০ মিনিটের বেশি অবস্থা করতে পারবেন না জানিয়ে ১৩টি নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
এদিকে সংবাদ সংগ্রহে নির্বাচন কমিশনের এই নীতিমালা বা নির্দেশনার কয়েকটি বিষয় নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন সাংবাদিকরা। গাজি টেলিভিশনের সিনিয়র সাংবাদিক আজম পারভেজ বলেন, মোটরসাইকেলের পাস নিতে গিয়েছি; কিন্তু পরিপত্র দেখিয়ে বলেছে পাস হবে না।
তিনি বলেন, ভোটের দিন একটি মাইক্রোবাস ভাড়া নিতে কমপক্ষে ৮ হাজার টাকা ভাড়া দিতে হবে। এই টাকা কোথায় পাব আমরা। অবাধ তথ্যের এই যুগে কমিশনকে এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার আহ্বান জানাই আমি।
রংপুর প্রেস ক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বাপ্পী বলেন, সাংবাদিকদের মোটরসাইকেল ব্যবহারের অনুমতিও দেওয়া হচ্ছে না, এটা দুঃখজনক।