এবার কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষককে পেটালেন এক বিএনপি নেতা। গত রোববার দুপুরে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আলোচনা-সমালোচনা সৃষ্টি হয়। জেলার রৌমারী উপজেলায় এক প্রধান শিক্ষককে আওয়ামী লীগ নেতার মারধরের রেশ কাটতে না কাটতেই আবারও এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষকরা।
এ খবর নিশ্চিত করে কুড়িগ্রাম সদর থানার ওসি মো. শাহরিয়ার বলেন, ভুক্তভোগী সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে মামলা করেছেন। মামলায় কুড়িগ্রাম জেলা বিএনপির সহ-ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, তার সহযোগী রুমন মিয়া, আমিনুর রহমান ও মো. বিদ্যুৎ মিয়ার নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। তিনি বলেন, পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ ডিসেম্বর ওই স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণির ভর্তি কার্যক্রম লটারির মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। মাসুদ রানার ছেলেও লটারিতে টিকে স্কুলে ভর্তি হয়। কিন্তু ২৮ ডিসেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে ৪২ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করা হয়। সরকারি নিয়ম ভেঙে প্রতারণা করে একাধিক নামে আবেদন করায় এসব শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল হয়।
বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীর মধ্যে মাসুদ রানার ছেলেও আছে। পরে মাসুদ রানা রোববার দুপুরে কুড়িগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে ভর্তি বাতিলের বিষয়টি জানতে চান এবং প্রধান শিক্ষকের হাতে পুনর্বিবেচনার আবেদন জমা দেন। এরই মধ্যে মাসুদ রানা নামে এক অভিভাবকের সঙ্গে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকীর কথা কাটাকাটি শুরু হয়। একপর্যায়ে অভিভাবক মাসুদ রানা, রুমন মিয়া, আমিনুর রহমান, বিদ্যুৎসহ আরও কয়েকজন ওই শিক্ষকের ওপর চড়াও হন। তাকে ধাক্কা মেরে রুমের এক কোনায় নিয়ে যান। এ সময় কিল-ঘুসি মারার অভিযোগও করেন ওই শিক্ষক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জিয়াসমিন আরা হক বলেন, স্কুলে ভর্তির ক্ষেত্রে অভিভাবকরা শিক্ষার্থীদের নামে একাধিক আবেদন করেছেন। এ কারণে ৪২ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করে দেওয়া হয়। এ নিয়ে কিছু অভিভাবক কথা বলতে গিয়ে আমার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। প্রতিবাদ করায় শিক্ষক আব্দুল হাই সিদ্দিকীর ওপর চড়াও হন অভিভাবক মাসুদ রানা।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মাসুদ রানা বলেন, ভর্তি পুনর্বিবেচনার আবেদন জমা দিতে গেলে শিক্ষকদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি ঘটনা ঘটে। এখানে হাতাহাতির কোনো ঘটনা ঘটেনি।