বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় গণসমাবেশে যাওয়ার পথে কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনের গাড়িবহর থামিয়ে গৌরনদী উপজেলার মাহিলাড়া বাসস্ট্যান্ডে বসে যুবলীগ নেতাকর্মীদের মারধর ও অফিস ভাঙচুরের ঘটনায় বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে মামলা হয়েছে। মামলায় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে স্থানীয় যুবলীগের দুই কর্মীকে ফাঁসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিএনপি নেতাদের সঙ্গে মামলার আসামি হওয়া স্থানীয় যুবলীগের কর্মী ফারুক সিকদার ও সজিব চোকদার। আজ সোমবার দুপুরে অভিযোগ করে তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তারা স্থানীয় যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। গত শুক্রবার দিবাগত রাতেও মাহিলাড়া বাসস্ট্যান্ডে বিএনপির জ্বালাও-পোড়াও রাজনীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন।
শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের গাড়িবহর থামিয়ে মাহিলাড়া বাসস্ট্যান্ডে যুবলীগের নেতাকর্মীদের পিটিয়ে আহত ও অফিস ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় শনিবার সন্ধ্যায় মামলা করেন যুবলীগ নেতা রাসেল রাঢ়ী। পরে জানতে পারি বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে মামলায় আমাদেরও আসামি করা হয়েছে।
তারা আরও বলেন, মামলার বাদী মাহিলাড়া ইউনিয়ন যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি রাসেল রাঢ়ীর সঙ্গে আমাদের ব্যক্তিগত বিরোধ রয়েছে। ওই বিরোধকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতাদের সঙ্গে মামলায় আমাদের আসামি করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সিকদার মহসিন সেন্টু বলেন, ‘ফারুক সিকদার ও সজিব চোকদার যুবলীগের কর্মী। তারা দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন। তবে কী কারণে তাদের মামলায় জড়ানো হয়েছে সে বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়। এটা মামলার বাদীই ভালো বলতে পারবেন।’
মামলার বাদী রাসেল হোসেন রাঢ়ী বলেন, তারা বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের আসামি করা হয়েছে।
সরকারি চাকরিজীবি রাজনৈতিক মামলার বাদী হতে পারবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। প্রয়োজনে চাকরি ছেড়ে দেবো।’
গৌরনদী উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ও মামলার আসামি মো. মনির হোসেন আকন বলেন, ‘বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার সঙ্গে দুজন যুবলীগ কর্মীও রয়েছেন বলে শুনেছি। মামলার বাদী রাসেল হোসেন রাঢ়ী আগৈলঝাড়া উপজেলার ইউনিয়ন ভূমি অফিসের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী। যিনি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে কারাবরণ করায় অতি সম্প্রতি চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত হয়েছেন। এ ছাড়া একই কারণে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতির পদ থেকে বহিস্কৃত হয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এখন জনবিচ্ছিন্ন, তাই এখন সরকারি কর্মচারী দিয়েও বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়ায়।’
গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. আফজাল হোসেন জানান, বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন শ্রমিকলীগ নেতা রাসেল। তিনি সরকারি চাকরি করেন কিনা, জানা নেই।
বিএনপির বরিশাল বিভাগীয় গণসমাবেশে যাওয়ার পথে গত শনিবার সকালে কেন্দ্রীয় বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইশরাক হোসেনের গাড়িবহরে হামলার জবাবে বহরে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীদের পাল্টা হামলার ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে। মামলায় ৭১ জনের নাম উল্লেখসহ আরও ৫০/৬০ জনকে আসামি করা হয়।
এর মধ্যে এজাহারের ২১ নম্বরে ফারুক সিকদার ও ২২ নম্বরে সজিব চোকদারের নাম রয়েছে। অপরদিকে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নেতাদর মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে হামলার সঙ্গে ইশরাক হোসেনের গাড়ি বহরে থাকা ঢাকার নেতাকর্মী ছাড়া স্থানীয় বিএনপির কাউকে দেখা যায়নি।