বিধি না মেনে ৫৬ ওয়ার্ডে ১৩ কোটি টাকা অনুদান দেন জাহাঙ্গীর

বিধিবহির্ভূতভাবে একই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে একাধিক চেক। নেই কোনো ওয়ার্ড কাউন্সিলরের সুপারিশ
জাহাঙ্গীর আলম।
জাহাঙ্গীর আলম।ছবি : সংগৃহীত

গাজীপুর সিটির ৫৬টি ওয়ার্ডে ১৩ কোটি ১৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যক্তিগত অনুদান দিয়েছেন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বহিষ্কৃত মেয়র জাহাঙ্গীর আলম। এসব অনুদানের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেননি তিনি। বিধিবহির্ভূতভাবে একই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে ইস্যু করেছেন একাধিক চেক। ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কোনো সুপারিশ এবং আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি ছাড়াই এসব অনুদান দেওয়া হয়।

সিটি করপোরেশনের তথ্যানুযায়ী, সর্বোচ্চ ১ কোটি ৩১ লাখ ৫ হাজার টাকা ব্যক্তিগত অনুদান প্রদান করা হয় ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে। আর সর্বনিম্ন ৭০ হাজার টাকা অনুদান দেওয়া হয় নগরীর ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে। এ ছাড়া ১ নম্বর ওয়ার্ডে ৭ লাখ ১০ হাজার টাকা, ২ নম্বর ওয়ার্ডে ১১ লাখ ৪০ হাজার, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ লাখ ২০ হাজার, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে ২১ লাখ ৭৫ হাজার, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে ৮ লাখ ৩০ হাজার, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে ২২ লাখ ৩০ হাজার, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে ২৯ লাখ ৮৫ হাজার, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে ২৪ লাখ, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে ৬ লাখ ৬০ হাজার, ১০ নম্বর ওয়ার্ডে ৬ লাখ ৯০ হাজার, ১১ নম্বর ওয়ার্ডে ৪ লাখ ৫০ হাজার, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে ১২ লাখ ৭০ হাজার, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৮ লাখ, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৪ লাখ ৯৫ হাজার, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৫ লাখ ৭০ হাজার, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৫৯ লাখ ৫ হাজার, ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৯ লাখ ১৫ হাজার, ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৪ লাখ ৫ হাজার, ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ২৮ লাখ ৩০ হাজার, ২০ নম্বর ওয়ার্ডে ৩২ লাখ ৩৫ হাজার, ২১ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৩ লাখ ৫০ হাজার, ২২ নম্বর ওয়ার্ডে ৫ লাখ ৯০ হাজার, ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৪৩ লাখ ৬৫ হাজার, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে ২২ লাখ ২৫ হাজার, ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে ১৬ লাখ ৮০ হাজার, ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে ২১ লাখ ৮৫ হাজার, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে ৪৬ লাখ ২৫ হাজার, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে ১০ লাখ, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে ২১ লাখ ৫ হাজার, ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে ৬৮ লাখ ১৫ হাজার, ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে ৩১ লাখ ৩০ হাজার, ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৫৯ লাখ ৭০ হাজার, ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৭৪ লাখ ৯০ হাজার, ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে ২২ লাখ ১০ হাজার, ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডে ৩৫ লাখ ৩৫ হাজার, ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডে ২২ লাখ ৬৫ হাজার, ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে ৪৬ লাখ ৩৫ হাজার, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে ১৭ লাখ ৫৫ হাজার, ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে ৪০ লাখ ৫০ হাজার, ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে ২০ লাখ ২০ হাজার, ৪২ নম্বর ওয়ার্ডে ২৩ লাখ ৪৫ হাজার, ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে ১ লাখ ১০ হাজার, ৪৪ নম্বর ওয়ার্ডে ২ লাখ ১০ হাজার, ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে ৩ লাখ ৯৫ হাজার, ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডে ১০ লাখ ৭৫ হাজার, ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডে ১৩ লাখ ১০ হাজার, ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডে ১৪ লাখ ৮০ হাজার, ৫০ নম্বর ওয়ার্ডে ৫ লাখ ২০ হাজার, ৫১ নম্বর ওয়ার্ডে ৩ লাখ ২০ হাজার, ৫২ নম্বর ওয়ার্ডে ৩ লাখ, ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডে ৩ লাখ ২০ হাজার, ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডে ৭২৫ হাজার, ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডে ২ লাখ ৩০ হাজার ও ৫৬ নম্বর ওয়ার্ডে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করেন সাবেক এ মেয়র।

জানা গেছে, এসব অনুদান প্রদানের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেননি তিনি। বিধিবহির্ভূতভাবে একই ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নামে ইস্যু করেছেন একাধিক চেক। এসব চেক প্রদানের পর বাস্তবে কাজ করা হয়েছে কি না, তা তদারকির জন্য কোনো কমিটিও গঠন করা হয়নি। ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কোনো সুপারিশ এবং আবেদনকারীর জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি ছাড়াই এসব অনুদান দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে কোনো কিছুর বাছবিচার না করে নিজের অনুগত লোকদের হাতেই অনুদান তুলে দেন জাহাঙ্গীর, যা নিয়ে অন্যদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com