প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামানকে বাসা থেকে তুলে নেওয়ায় উদ্বিগ্ন তার মা করিমন নেসা। ছেলেকে ফিরে পেতে বুক চাপড়ে কান্না করছেন তিনি।
করিমন নেসা বলেন, ‘আমার ছেলে কি চুরি করেছে, নাকি ডাকাতি করেছে। আমার ছেলের কী অপরাধ। আমার ছেলেকে বললে ও নিজেই থানায় গিয়ে হাজির হতো। কেন এভাবে রাতে আমার ছেলেকে তুলে নেওয়া হলো।’
শামসুজ্জামান প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক। তিনি ঢাকার সাভারে দায়িত্বরত। বুধবার ভোররাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আমবাগান এলাকার বাসা থেকে সিআইডি পরিচয় দিয়ে কয়েকজন তাকে তুলে নিয়ে আসেন। তখন শামসুজ্জামানের মা করিমন নেসা ছিলেন মানিকগঞ্জ সদরের কাটিগ্রামে নিজেদের বাড়িতে। তিনি ছেলেকে ধরে নেওয়ার খবর পান সকাল ১০টার পর।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে আমবাগান এলাকায় একটি বাসা নিয়ে থাকেন শামসুজ্জামান। তার ভাই ২০১৬ সালে হোলি আর্টিজান বেকারিতে অভিযান চালাতে গিয়ে প্রাণ হারানো পুলিশের সহকারী কমিশনার রবিউল ইসলামও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন।
সরেজমিনে মানিকগঞ্জের কাটিগ্রামে শামসুজ্জামানদের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সব ঘরে তালা ঝুলছে। বাড়ির উঠানে বসে ছিলেন কয়েকজন নারী।
শামসুজ্জামানের মায়ের চাচি শাশুড়ি আমেনা বেগম বলেন, সকালে শামসকে তুলে নেওয়ার খবর আসে গ্রামে। এর পর থেকে অনেকটা পাগলের মতো আচরণ করতে থাকেন তার মা করিমন নেসা। বুক চাপড়ে, কপাল চাপড়ে কাঁদতে থাকেন তিনি।
Link a Story
প্রথম আলোর সাংবাদিককে বাসা থেকে তুলে নেওয়ার অভিযোগ
করিমন নেসা বলছিলেন, ‘আল্লাহ আমার স্বামীরে নিছে, এক সন্তানরে নিছে। আমার এই সন্তানকে বুকে ফিরায় দাও আল্লাহ, আমি আর কিচ্ছু চাই না। আমার সন্তান ঘরে থাকব, আমি ওর মা ডাক শুনব।’
শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, এমন খবর শুনে করিমন নেসা বলেন, ‘আমার পোলায় কি চোর না ডাকাত, ওরে কিসের মামলায় দিছে? আমি খালি চাই, আমার ছেলে বুকে ফিরে আসুক।’
করিমন নেসার ভাই ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘দুর্ভাগ্য বোনটার পিছু ছাড়ছে না। বড় ছেলে যাওয়ার পর এই ছোট ছেলেই তার সবকিছু। ছেলের খবর শোনার পর থেকেই পাগলের মতো করছে ও।’