লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে শ্বশুরবাড়ির পাশের বাগান থেকে হারুনুর রশিদ হারুন (৩৩) নামে এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার দক্ষিণ চরবংশী ইউপির কুচিয়ামারা গ্রামের মাইচ্ছাখালি ব্রিজ এলাকা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত হারুন সদর উপজেলার চররুহিতা ইউনিয়নের নবীগঞ্জ বাজার এলাকার বাসিন্দা। তিনি পেশায় কসাই ছিলেন।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হারুনের শাশুড়ি খুকি বেগম ও স্ত্রী বৈশাখী বেগমকে রায়পুর থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। হারুনের শ্বশুর মনছুর আহমেদ ও ভায়রা জুয়েল ঘটনার পর থেকেই আত্মগোপনে রয়েছেন।
হারুনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার বাবা আবদুল মান্নান, মা কহিনুর বেগম, ভাই রিয়াজ হোসেন ও বোন জ্যোৎস্না বেগম। তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিচার চেয়েছেন।
হারুনের ভাই ও বোন বলেন, আমার ভাবি বৈশাখীর বিয়ের আগে প্রেম ছিল। বিয়ের পরেও তিনি প্রেমিকের সঙ্গে কথা বলতেন। এ নিয়ে প্রায়ই হারুনের সঙ্গে তার বাগবিতণ্ডা হতো। গতকাল রাতে হারুনকে তার ভায়রা জুয়েল শ্বশুরবাড়িতে মোবাইল ফোনে ডেকে নিয়ে যায়। রাত ৩টার দিকে খবর আসে- হারুন আত্মহত্যা করেছে। এটি আত্মহত্যা নয়। তাকে পরিকল্পিতভাবে পিটিয়ে হত্যা করে মরদেহ বাগানে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
হারুনের পরিবারের লোকজন জানান, প্রায় ৫ মাস আগে চরবংশী গ্রামের মনছুর আহমেদের মেয়ে বৈশাখীর সঙ্গে হারুনের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। এর কিছুদিন পরই জানা যায় বৈশাখীর অন্য ছেলের সঙ্গে প্রেম রয়েছে। বৈশাখীও নিয়মিত ওই ছেলের সঙ্গে কথা বলত। এ নিয়ে তাদের মধ্যে ঝামেলা হতো। এসব কারণে কয়েকদিন আগে বৈশাখী তাদের বাড়িতে চলে যায়। গতকাল রাতে হারুনকে বৈশাখীর বোনজামাই শ্বশুরবাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। এরপর শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে হত্যা করে। পরে ঘটনাটি অন্যদিকে প্রভাবিত করতে বাড়ির পাশে বাগানে মরদেহ ঝুলিয়ে রাখে।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কজন বাসিন্দা জানান, হারুনের বয়সের তুলনায় বৈশাখীর বয়স অনেক কম। প্রাপ্ত বয়স না হলেও তাকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিয়ের সময় তার বয়স প্রায় ১৫-১৬ বছর ছিল। এতে স্বামীর সঙ্গে তার সামঞ্জস্যতা ছিল না। এ নিয়েই মেয়েটি রাগ করে বাবার বাড়িতে চলে আসে।
রায়পুরের হাজিমারা পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক (ইনচার্জ) মফিজ উদ্দিন বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতের কপালে জখম রয়েছে। শ্বশুরবাড়ির লোকজন জানিয়েছে, হারুন নিজেই বরই গাছের সঙ্গে আঘাত করে কপালে জখম করেছে। তবে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।’