লাকী আক্তার মা-বাবা হারানোর পর থেকে বড় বোন নার্গিস আক্তারের সঙ্গেই থাকেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রতিপক্ষের দেওয়া আগুনে তাদের বাড়ির সবকিছু পুড়ে গেছে, লুটও হয়েছে। সব হারিয়ে এখন তারা দিশাহারা লাকী ও নার্গিস।
আজ শুক্রবার দুপুরে খোলা আকাশের নিচে বসে অনাহারে থাকা ছোট্ট শিশুকে কোলে নিয়ে হাউমাউ করে কাঁদছিলেন নার্গিস। সকাল থেকে পেটে দানা পড়েনি তাদের কারোরই। দুপুরে কী খাবেন, জিজ্ঞেস করতেই দুই বোন ডুকরে কেঁদে উঠে বলেন, ‘কী খাব, সব তো পুড়ে গেছে।’
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার চুনিয়াপাড়ায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রতিপক্ষের দেওয়া আগুনে প্রায় ৩০টি বাড়ির সবকিছু পুড়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে লাকী ও নার্গিস দুজন।
শুক্রবার বিকেল ৪টা পর্যন্ত পুলিশ ছাড়া কেউ তাদের খোঁজ নেয়নি। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), উপজেলা চেয়ারম্যান ও স্থানীয় জনপ্রতিধিনিদের কেউই এই ব্যক্তিদের দেখতে আসেননি। এমনকি তাদের জন্য খাবার বা কোনো ত্রাণসামগ্রীও পাঠাননি।
ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাফিউল আলম কালবেলাকে বলেন, ‘আমরা বিকেলে ওখানে যাব। সেখানে থমথমে অবস্থা চলছে, ওরা নিজেরাও একটু ভয় পাচ্ছে। আজকে বিকেলে নয়তো কাল সকালে তাদের জন্য চাল ও কম্বল পাঠানো হবে।’
অন্যদিকে, দুপুরে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার গ্রামের পুড়ে যাওয়া বাড়িঘর পরিদর্শন করেছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে আশ্বস্ত করেন।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বুধবার সকালে জমি দখল কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় খোদাদাতপুর গ্রামের মনোয়ার হোসেন ও রাকিব হোসেন নামের দুজন নিহত হন। গতকাল দুপুরে দুজনের জানাজা চলছিল। এ সময় নিহত ব্যক্তিদের পক্ষের লোকজন চুনিয়াপাড়ায় বাড়ি বাড়ি ঢুকে অগ্নিসংযোগ করেন বলে ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ করেছেন।
অগ্নিসংযোগকালে লোকজন লাঠি, দা নিয়ে হামলা ও লুটপাট চালায়। এ সময় প্রাণ বাঁচাতে নারী, শিশু ও পুরুষরা বাড়িঘর ছেড়ে পালান।