গাংনী উপজেলার মাথাভাঙ্গা নদীর উপর সেতু নির্মাণকাজের মেয়াদ শেষ হলেও সংযোগ সড়ক না থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে স্থানীয়রা। এ জন্য দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
স্থানীয়রা জানান, বর্ষাকালে মাথাভাঙ্গা নদী পারাপারে একমাত্র ভরসা ছিল নৌকা এবং শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো। স্বাধীনতার ৫০ বছর পর মেহেরপুর-কুষ্টিয়া জেলা সীমানা নির্ধারণ করা মাথাভাঙ্গা নদীর উপর গাংনী উপজেলার বেতবাড়িয়া ও দৌলতপুর উপজেলার মধুগাড়ি ঘাট এলাকায় একটি সেতু নির্মাণ করা হয়। এই সেতু নির্মাণের ফলে দুই জেলার হাজারো মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সহজ হবে বলে আশা ছিল তাদের।
তবে দীর্ঘ সময় প্রতীক্ষার পর গত কয়েক মাস আগে সেতু নির্মাণের সব কাজ সম্পন্ন হলেও সেতুর গাংনী অংশে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হয়নি। ফলে সেতুটি ব্যবহার করতে পারছে না দুই পারের হাজারো মানুষ। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন পথচারীরা। দ্রুত সময়ের মধ্যে সংযোগ সড়কটির নির্মাণকাজ শেষ করার দাবি স্থানীয়দের।
স্থানীয় ব্যবসায়ী রমজান আলী জানান, ‘ব্রিজ হয়েছে কিন্তু রাস্তা নাই। রাস্তাটা যদি হয় তাহলে আমাদের কাঁচামাল নিয়ে যেতে খরচ কম হবে। রাস্তা না হওয়ার কারণে সমস্যা দ্বিগুণ বেড়েছে। যাতায়াত করা খুব সমস্যা। কারণ এর আগে ব্যবসার জন্য কোনো পণ্য কিনে ১০ কিলোমিটার ঘুরে আসতে হতো। এখন ব্রিজ হয়েছে বলে রাস্তা কমেছে পাশাপাশি খরচও কমে যাবে।’
গাংনী উপজেলা প্রকৌশলী অফিসের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে এলজিইডি বেতবাড়িয়া-মধুগাড়ি সংযোগস্থলে গত ৮ জুলাই মাথাভাঙ্গা নদীর উপর সাত কোটি ২৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ১০ হাজার ১০০ মিটার সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। নির্মাণকাজের মেয়াদও শেষ হয়েছে অনেক আগেই। কিন্তু সেতুটির সম্মুখভাগের ব্যক্তি মালিকানাধীন জমি না দেওয়ায় সংযোগ সড়কটি নির্মাণ করা যায়নি।
এ বিষয়ে স্থানীয় জামিরুল ইসলাম বলেন, ‘ব্রিজের সম্মুখের জমি আমাদের। আমরা বলেছি সরকারিভাবে জমি অধিগ্রহণ করে নিতে। দ্রুত সংযোগ সড়ক করে দিলে মানুষের ভোগান্তি কমে যাবে। আমরা জমি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছি, জমি দিয়ে দেব।’
ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গাজীপুরের কফিল এন্টারপ্রাইজের দায়িত্বে থাকা মুহাম্মদ আলী জানান, ‘নিয়মানুযায়ী ব্রিজের কাজ শেষ করা হয়েছে। কিন্তু জমি নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায় সংযোগ সড়কের কাজ করা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে এলজিইডি কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। তারা জমি অধিগ্রহণ করে দিলে আমরা দ্রুত সংযোগ সড়কের কাজ শেষ দিতে পারব।’
গাংনী উপজেলা প্রকৌশলী ফয়সাল হোসেনের অভিযোগ, সেতুটি নির্মাণ করার আগে সংযোগ সড়কের জন্য জমির মালিক জমি দিতে চেয়েছিল। এখন দিতে চাচ্ছে না। তবে ব্রিজের সম্মুখভাগের জমি অধিগ্রহণ করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করা হলে পথচারীদের আর কোনো দুর্ভোগ থাকবে না।