
হবিগঞ্জ থেকে বিপুল কর্মী-সমর্থক বিএনপির সিলেট বিভাগীয় গণসমাবেশে অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন দলটির দায়িত্বশীল নেতারা। এরই মধ্যে কয়েক হাজার নেতাকর্মী সমাবেশস্থল আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে পৌঁছেছেন বলে জানা গেছে।
বিএনপির নেতাদের দাবি, নেতাকর্মীদের হয়রানি, ধরপাকড় ও কথিত ধর্মঘট না করা হলে গণসমাবেশ মহাসমাবেশে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা ছিল। তবে সব বাধা-বিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা দূর করে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের প্রায় ২০ হাজার কর্মী-সমর্থক গণসমাবেশে অংশ নিচ্ছেন। বাস ধর্মঘট থাকা সত্ত্বেও ট্রেন ও ট্রাকে করে নেতাকর্মীরা সিলেটে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে হবিগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলা থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের উদ্যোগে উঠান বৈঠক, কর্মী সমাবেশ ও প্রচার চালানো হয়। ধর্মঘট থাকায় বেশিরভাগ নেতাকর্মীই ট্রেনে করে যাচ্ছেন।
এদিকে, হবিগঞ্জ জেলা বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের মধ্যে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্তি রয়েছে। প্রতিটি গ্রুপই নিজেদের শক্তি জানান দিতে এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের সামনে নিজেদের উপস্থাপন করতে আলাদাভাবে কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে গণসমাবেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে।
হবিগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি এমদাদুল হক ইমরান জানান, পুরো জেলা থেকে ছাত্রদলের অন্তত পাঁচ হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক সিলেটের গণসমাবেশে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু বাস ধর্মঘট দেওয়া হয়েছে, সেহেতু আমরা বিকল্প পথে যাচ্ছি। তবে কোনো বাধাই নেতাকর্মীদের আটকে রাখতে পারবে না।’
জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জালাল আহমেদ বলেন, ‘সিলেট বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল করতে এরই মধ্যে আমরা প্রচার চালিয়ে যাচ্ছি।’ তিনি জানান, হবিগঞ্জ থেকে যুবদলের অন্তত ছয় হাজার নেতাকর্মী ও সমর্থক গণসমাবেশে অংশ নিচ্ছেন। সব বাধা উপেক্ষা করে নেতাকর্মীরা সামবেশের উদ্দেশে যাচ্ছেন। বেশিরভাগ নেতাকর্মী এরই মধ্যে সমাবেশস্থলে পৌঁছেছেন।
হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবুল হাশিম জানান, হবিগঞ্জ থেকে বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের বড় একটি অংশ সমাবেশে যোগ দিচ্ছেন। নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা রয়েছে। তবে সরকার যেভাবে বাধা দিচ্ছে, একসঙ্গে সমাবেশে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। যে যেভাবে পারবেন, সমাবেশে অংশ নেবেন।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সমবায়বিষয়ক সম্পাদক জি কে গউছ জানান, বিভাগীয় সমাবেশে যোগ দিতে হবিগঞ্জে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সরকারের সব ষড়যন্ত্র ও বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি কর্মী-সমর্থক আলিয়া মাদ্রাসার সমাবেশে অংশ নেবেন।
তিনি আরও জানান, হামলা-মামলা করেও কর্মীদের আটকানো সম্ভব হয়নি। সমাবেশ যত ঘনিয়ে আসছে, মানুষ তত বাড়ছে। মাদ্রাসা মাঠেই হবিগঞ্জের সব কর্মী-সমর্থকদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
হবিগঞ্জ থেকে কতজন কর্মী-সমর্থক অংশ নেবেন—এমন প্রশ্নের জবাবে জি কে গউছ বলেন, ‘এককথায় এযাবৎকালের সবচেয়ে বেশি মানুষ সিলেটের গণসমাবেশে অংশ নেবেন। সর্বস্তরের লোকজন গণসমাবেশে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।’
কেন্দ্রীয় বিএনপির সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হাসান জীবন জানান, সিলেট বিভাগীয় সমাবেশে অন্তত পাঁচ লাখ মানুষের উপস্থিতির জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। তবে সরকার ধর্মঘটের নামে পথে পথে বাধা-বিপত্তি সৃষ্টি করেছে।
তিনি জানান, হবিগঞ্জ থেকে সবচেয়ে বেশি লোক অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে। সকল বাধাবিপত্তি মোকাবিলা করেই সমাবেশে অংশ নেবেন নেতাকর্মীরা।