শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৩, ০৩:০৭ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পরে সংলাপ : বিএনপি

আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পরে সংলাপ : বিএনপি

আগে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার পরে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সঙ্গে সংলাপ হতে পারে বলে জানিয়েছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অনানুষ্ঠানিকভাবে হলেও ইসির প্রস্তাবিত আলোচনা ও মতবিনিময় বিএনপির পক্ষে গ্রহণ করা সম্ভব নয়।

আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানে দলীয় প্রধানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান তিনি।

গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে অনুষ্ঠিত দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেওয়া এ সিদ্ধান্তের কথা জানাতে সংবাদ সম্মেলনে আসেন মির্জা ফখরুল। তবে আলোচনার চিঠি পাঠানোর জন্য প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে ধন্যবাদ জানায় বিএনপি।

গত ২৩ মার্চ বিএনপি মহাসচিবকে এ চিঠি দেয় নির্বাচন কমিশন। তবে মঙ্গলবার এক সম্মেলনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, তারা বিএনপিকে সংলাপের জন্য নয়, অনানুষ্ঠানিকভাবে আলোচনার জন্য চিঠি দিয়েছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কোনো আলোচনা অথবা সংলাপ ফলপ্রসূ হবে না। সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল কর্তৃক মহাসচিবকে প্রেরিত পত্রটির বিষয়ে আলোচনা হয়। পত্রে বিএনপিকে আনুষ্ঠানিক না হলেও অনানুষ্ঠানিক আলোচনা ও মতবিনিময়ের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়।

তিনি বলেন, সভা মনে করে বর্তমানের মূল রাজনৈতিক সংকট নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কোনো আলোচনা অথবা সংলাপ ফলপ্রসূ হবে না এবং তা হবে অর্থহীন। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে, নির্বাচন কমিশন স্বাধীন নয় এবং ইচ্ছা থাকলেও নির্বাচনকে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠানের নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা নেই।

তিনি বলেন, সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, যেহেতু মূল রাজনৈতিক সমস্যার সমাধানের কোনো সম্ভাবনা নির্বাচন কমিশন প্রস্তাবিত আলোচনা ও মতবিনিময়ে সম্ভব নয়, সে কারণে বিএনপি এই প্রস্তাব গ্রহণ করতে পারছে না।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, স্থায়ী কমিটির সভায় বলা হয়েছে, পবিত্র রমজান মাসে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির কারণে জনজীবন সীমাহীন দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। অথচ অবৈধ সরকারের মন্ত্রী এবং শাসক দলের নেতাদের জিনিসপত্রের দাম জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যেই রয়েছে এবং এত মানুষ লাইন দিয়ে ইফতারসামগ্রী কিনছেন প্রমাণ করে, তাদের আয় বেড়েছে’ উক্তি জনগণের সঙ্গে নিকৃষ্ট ধরনের মশকরা ছাড়া আর কিছু নয়। রাজনৈতিক দলগুলোর বারবার সরকারকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান করলেও সরকার এ ব্যাপারে উদাসীন।

তিনি আরও বলেন, সরকারি দলের ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট ও এক শ্রেণির কর্মকর্তাদের দুর্নীতির কারণেই দ্রব্যমূল্য কমানোর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। এই জনবিচ্ছিন্ন সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। বিএনপি ইতোমধ্যে অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে দেশব্যাপী কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সভায় আগামী ১ এপ্রিল হতে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত মহানগর, জেলা, উপজেলা, পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে গৃহীত মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি যথাযথভাবে পালনের জন্য সংশ্লিষ্ট সব শাখাকে অনুরোধ জানানো হয়।

স্থায়ী কমিটির সভায় ইউরোপ ও আমেরিকা প্রবাসী সাংবাদিকদের দেশে বসবাসকারীর নিকট আত্মীয়দের ওপর হামলা ক্রমাগতভাবে বেড়ে চলায় গভীর ক্ষোভ, উদ্বেগ ও নিন্দা প্রকাশ করা হয়। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক টিভি চ্যানেল ‘আলজাজিরায়’ বাংলাদেশে মোবাইল টেলিফোন আড়িপাতার লক্ষ্যে বিদেশ থেকে প্রযুক্তি ক্রয়ের বিষয়ে সরকারের যোগাসাজশ সম্পর্কিত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশকারী সাংবাদিক জুলকার নাইন সায়ের খান সামির ভাই মাহিনুর আহমেদ খানকে গত ১৭ মার্চ সাদা পোশাকধারী লোকেরা মারাত্মকভাবে কুপিয়ে আহত করার বিষয়ে গভীর ক্ষোভ, উদ্বেগ ও নিন্দা প্রকাশ করা হয়।

এ ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ইউরোপ প্রবাসী কয়েকজন সাংবাদিকদের দেশে বসবাসরত পরিবারের ওপর আক্রমণ, হুমকির নিন্দা জানানো হয়। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী সাংবাদিক কনক সারোয়ারের গৃহবধূর বোনকে গ্রেপ্তার এবং মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠানোর নির্যাতনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। সভা অবিলম্বে সাংবাদিক এবং তাদের পরিবারবর্গের প্রতি ভীতি প্রদর্শন এবং সব ধরনের নির্যাতন বন্ধ করার দাবি জানায়।

সভায় রাষ্ট্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ বিমানের ই-মেইল সার্ভার হ্যাকারদের কবলে পড়ার সংবাদে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়। ইতোপূর্বে ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি সাইবার আক্রমণের কবলে পড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরির এখন পর্যন্ত কোনো সুরাহা করতে না পারা সরকারের ব্যর্থতা এবং কোনো প্রভাবশালী মহলের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ করে।

ফখরুল বলেন, ডিজিটাল সিকিউরিটির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর সাইবার নিরাপত্তা রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে সাইবার নিরাপত্তার নামে সরকার নিপীড়নমূলক আইন তৈরিতেই ব্যস্ত একইসঙ্গে এই আইনের অপ্রয়োগের মাধ্যমে ভিন্নমত পোষণকারী সাংবাদিক, সাধারণ নাগরিক ও বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের ওপরে নির্যাতনে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করে নিজেদের অবৈধ ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী কারার হীন চক্রান্ত করছে। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানগুলোর আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরনে চূড়ান্তভাবে সরকার ব্যর্থ হয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ব্যারিস্টার খোকনের দলীয় পদ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বিএনপি 

বাড়ি ফেরা হলো না বাবা-ছেলের

বাংলাদেশের দাবদাহ নিয়ে যা বলছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম

অনুষ্ঠিত হলো বিইউএইচএস -এর প্রথম সমাবর্তন

ইউরোপ ধ্বংস হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে : ম্যাখোঁ

ছেলেদের দোষে ডুবছেন মাহাথির মোহাম্মদ

হিজাব আইন না মানায় ইরানে ব্যাপক ধরপাকড়

তীব্র তাপপ্রবাহে বৃষ্টি চেয়ে হাজারো মুসল্লির কান্না

মানব পাচারের দায়ে একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

ঝিনাইদহে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন

১০

কারিগরির ফাঁকা সনদ মিলল তোষকের নিচে, গ্রেপ্তার কম্পিউটার অপারেটর

১১

ঝিনাইদহে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়

১২

ভোট দিলে যে শহরে মিলবে ফ্রি বিয়ার, ট্যাক্সিসহ নানা সুবিধা

১৩

কুমিল্লায় পানিতে ডুবে ৪ শিশুর মৃত্যু

১৪

খালেদা জিয়ার সঙ্গে ফখরুলের সাক্ষাৎ

১৫

চট্টগ্রামে জব্বারের বলী খেলায় চ্যাম্পিয়ন কুমিল্লার বাঘা শরীফ

১৬

সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিশ্রুতি তুলে ধরলেন শিক্ষামন্ত্রী 

১৭

৭৩ বছরে ছাত্র ইউনিয়ন  

১৮

কৃষক খুনের ঘটনায় থামছে না ভাঙচুর ও লুটপাট

১৯

হজের জন্য অনুমতি দেওয়া শুরু করেছে সৌদি আরব

২০
*/ ?>
X