
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা।
আজ রোববার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে সংগঠনের নেতাকর্মীরা এ সমাবেশ করেন। এ সময় অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচন দেওয়ার দাবি জানান তারা। তবে ছাত্র অধিকার পূর্বঘোষিত কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে।
ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীদের অভিযোগ, পূর্ব নির্ধারিত সময়ে ডাকসু ভবনের সামনে ছাত্র অধিকার পরিষদের কর্মসূচি করার কথা থাকলেও কর্মসূচি শুরুর আগে সেখানে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তারা সেখানে অবস্থান নিয়ে ক্রিকেট খেলা শুরু করে। পরে ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এসে তাদের কর্মসূচি করলেও সেখানেও মোটরসাইকেলের হর্ন ও হইচই করে কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সমাবেশে ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামীন মোল্লা বলেন, শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের একটি প্লাটফর্ম হলো ছাত্র সংসদ। কিন্তু সেই ছাত্র সংসদ নির্বাচন এখন আর হচ্ছে না। ২৮ বছর পরে ডাকসু নির্বাচন হয়েছিল কিন্তু এরপর প্রশাসন আর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ডাকসু নির্বাচনের উদ্যোগ না নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ছাত্রলীগকে একাধিপত্য করার সুযোগ করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে প্রমাণিত হলো ডাকসু নির্বাচন কেন হয় না, নির্বাচন হলে ছাত্রলীগ কোথাও জিততে পারবে না। লোক লজ্জায় মিডিয়ার সামনে তারা ডাকসু চায় বললেও ডাকসুর দাবিতে ছাত্র অধিকার পরিষদের অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে আগেই তারা ডাকসু ভবনের সামনে ক্রিকেট ব্যাট, স্টাম্প, লাঠিসোঁটা নিয়ে অবস্থান নেয়। আমরা অবস্থান পরিবর্তন করে রাজু ভাস্কর্যের সামনে দাঁড়ালে সেখানে এসে বাইক দিয়ে হর্ন বাজানো, গিয়ার দিয়ে শব্দ দূষণ করা, অশ্রাব্য কটূক্তি করে স্লোগান দিয়ে বাধাগ্রস্ত করে।
ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, ‘ডাকসু শিক্ষার্থীদের বৈধ প্লাটফর্ম। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ক্ষমতাসীনদের যোগসাজশে ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একচ্ছত্র ত্রাস বজায় রাখার উদ্দেশ্যে এই নির্বাচন বন্ধ রেখেছে। কারণ, নির্বাচন হলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগকে ভোট দেবে না। সারা দেশের ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। অবিলম্বে ডাকসু নির্বাচনের তপশিল ঘোষণা করতে হবে।’
ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সহসভাপতি আখতার হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য যে বিশ্ববিদ্যালয়, সেখানে সবথেকে বড় বঞ্চিত অংশই হলো শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতি সব নির্বাচন হয়, হয় না শুধু ডাকসু নির্বাচন। অথচ শিক্ষার্থীরা প্রতিবছরই ছাত্র সংসদের জন্য ফি দিচ্ছে। মনে রাখতে হবে, ডাকসুই শিক্ষার্থীদের অধিকারের বিষয়, ঐচ্ছিক কিছু নয়।
প্রসঙ্গত, দীর্ঘ ২৮ বছর পর ২০১৯ সালের ১১ মার্চ ডাকসু নির্বাচন হয়। এরপর থেকে আর নির্বাচন হয়নি। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ-১৯৭৩ এ, প্রতিবছর ডাকসু নির্বাচন করার কথা বলা হয়েছে।