ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারকে ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা বলেছেন, এই সরকারের পতন ঘটানো পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। আজ বুধবার দুপুরে এক বিক্ষোভ সমাবেশে তারা এই মন্তব্য করেন।
‘গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন, অবৈধ সরকারের পদত্যাগ ও ১০ দফা দাবি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে’ যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে রাজধানীর বিজয়নগর পানির ট্যাঙ্ক সংলগ্ন সড়কে এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে ১২ দলীয় জোট।
জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান ও সাবেক মন্ত্রী মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে এবং জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদার পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন—১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম বীরপ্রতীক, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরান, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, এনডিপির চেয়ারম্যান কেএম আবু তাহের, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, মুসলিম লীগের (বিএমএল) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, ইসলামী ঐক্য জোটের মহাসচিব মাওলানা আব্দুল করিম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেমসহ ১২ দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে বাকশাল গঠন করে একদলীয় স্বৈরশাসন চালু করা হয়। এটি ছিল ইতিহাসের জঘন্যতম একটি কালাকানুন চাপিয়ে দেওয়ার ভয়াবহ দিন। সংসদীয় গণতন্ত্র হত্যা করে প্রেসিডেন্সিয়াল গভর্নমেন্ট চালু করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান বিনা ভোটে সারা জীবনের জন্য রাষ্ট্রপতি থাকার আইন পাশ করেন।
১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা বলেন, প্রায় ৫ দশক পরে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে ভোট ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়ে বিরোধী রাজনৈতিক দলের ওপর দমন-পীড়ন, হামলা, মামলা, খুন, গুমের মতো নিষ্ঠুর আচরণ শুরু করেছে। কৌশলগত কারণে পিতার মতো একদল ঘোষণা না দিয়ে মাঠপর্যায়ে বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়ন অব্যাহত রেখেছে।
তারা আরও বলেন, এ দেশের মানুষ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এই ভোটচোর সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন হতে দেবে না। এই অবৈধ সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে, অবৈধ সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্র ও জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা হবে।
অবৈধ সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিল এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ১০ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত জনগণের রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাবে।