সব বাধা অতিক্রম করে আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় সর্বকালের সর্ববৃহৎ গণসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ বুধবার সন্ধ্যায় রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘ঢাকা মহানগরসহ দেশব্যাপী বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে অসংখ্য নেতাকর্মীকে আসামি করা, গ্রেপ্তার, হয়রানি, দিনে-রাতে বাসায় পুলিশ হানা দিয়ে পরিবারের লোকজনদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করা হচ্ছে অশালীনভাবে। গত ১৪ বছর ধরে গণতন্ত্র, বহুত্ববাদ, সুশাসন, স্বচ্ছতা, সহনশীলতাকে অচেনা শব্দে পরিণত করা হয়েছে। অসম্মান করা হয়েছে মানুষের ভোটাধিকারকে।
‘অবাধ, মুক্ত, স্বচ্ছ, ইনক্লুসিভ নির্বাচনকে আইসিইউ-তে পাঠানো হয়েছে। এই ক্রান্তিকাল অতিক্রম করতে বর্তমানে জনগণের বিপুল উত্থান দেখে সরকার দিশাহারা হয়ে প্রতিহিংসার বন্য আচরণ শুরু করেছে। বিরোধী দলের টুঁটি চেপে ধরার জন্য এরা রাষ্ট্রশক্তিকে নির্বিচারে ব্যবহার করছে।’
তিনি বলেন, ‘তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাহেব বলেছেন—ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশের দিন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের কর্মীরা প্রস্তুত থাকবে। বিএনপি তো গণসমাবেশ করবে, আর গণসমাবেশে মানুষের উপস্থিতিটাই একটি রাজনৈতিক দলের বড় অর্জন। সুতরাং সমাবেশকে সফল করতে শান্তি ও স্থিতিশীলতা অপরিহার্য, সেটি রক্ষার জন্য একটি রাজনৈতিক দল সর্বাত্মক উদ্যোগ ও ব্যবস্থা গ্রহণ করে। এখানে তো সংঘাতের কোনো প্রশ্নই আসে না। হাছান মাহমুদের এই বক্তব্য প্রধানমন্ত্রীর মনের ইচ্ছার হুবহু প্রতিধ্বনি। তবে আওয়ামী সরকার তার লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হবে। জনগণের বিশাল শক্তির কাছে চক্রান্তের কোনো আস্ফালন টিকতে পারবে না।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘গণতন্ত্রকামী বিএনপির নেতাকর্মীরা শান্তিকামী, কিন্তু অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধের ক্ষেত্রে তারা অবিচল। রাষ্ট্রশক্তি প্রয়োগ করেও তাদের কন্ঠের উচ্চারণকে থামানো যাবে না। শেখ হাসিনা বিরোধী দলকে দমাতে হত্যার যে নীতি অবলম্বন করেছেন তাতে তিনি সফলকাম হবেন না। তার আমলে একের পর এক নিরপরাধ লোককে হত্যার কোনো বিচার হয়নি। তাই আওয়ামী দুর্বৃত্তরা সহিংস কার্যাবলী চালাতে উৎসাহিত হয়েছেন। প্রতি দুই দিন, তিন দিন পরই বিএনপিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের হত্যা ও অতর্কিতে হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করছে, পঙ্গু হয়েছে অনেক নেতাকর্মী, এর ওপর চলছে দেশব্যাপী বেপরোয়া পুলিশি অভিযান, হামলা-মামলার হিড়িক। এসবই রাষ্ট্রের প্রধান ব্যক্তির ইশারাতেই হচ্ছে।’
ওই সময় ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা-মামলা, গ্রেপ্তারের চিত্র তুলে ধরেন দলটির সিনিয়র এই যুগ্ম-মহাসচিব। রিজভী এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে গ্রেপ্তার হওয়া নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তিসহ মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের জোর দাবি জানান।