
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের দুর্নীতি, লুটপাট ও দুঃশাসন থেকে দেশের মানুষ মুক্তি চায় বলে দাবি করেছেন গণফোরামের একাংশের সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টু। সরকারবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর আরামবাগে গণফোরাম চত্বরে এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ দাবি করেন তিনি।
১০ দফা দাবি আদায় এবং সরকারের সর্বগ্রাসী দুর্নীতির প্রতিবাদে গণফোরাম ও বাংলাদেশ পিপলস পার্টির (বিপিপি) যৌথ উদ্যোগে এই সমাবেশ হয়।
মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে সব দ্রব্যমূল্য। সাধারণ জনগণ একেবারেই শেষ হয়ে গেছে; ভালো আছে গুটি কয়েক দুর্নীতিবাজ ঘুষখোর রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তা-কর্মচারী, সরকারদলীয় লুটেরা রাজনীতিবিদ ও দখলদার-মজুতদার ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশের মানুষ ভালো নেই। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স রিজার্ভ ফান্ড থেকে চুরি করে দেশের বাইরে পাচার করছে। এই দুঃশাসনের অবসান ঘটাতে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে জনতার সরকার প্রতিষ্ঠার কোনো বিকল্প নেই। সেই লক্ষ্যে এই অবৈধ সরকারকে হটাতে রাজপথে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে, যার মাধ্যমে জনগণ অর্থনৈতিক মুক্তি এবং ভোটাধিকার ফিরে পাবে। আজ দুর্নীতিবিরোধী সমাবেশে এই আমাদের শপথ।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বাবুল সর্দার চাখারী বলেন, আমাদের চাওয়া জনগণের অধিকার আদায়, বিশেষভাবে জনগণের ভোটাধিকার আদায়। যে সরকার জনগণের ভোটাধিকার আদায়ে বাধা দেয় তারা গণতন্ত্রবিরোধী সরকার। তিনি জানান, কোনো দলীয় সরকারের অধীনে এ দেশের জনগণ নির্বাচনে যাবে না। জনতার পক্ষে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের দাবিতে গণফোরাম ও পিপলস পার্টির সংগ্রাম চলবে।
গণফোরামের একাংশের সাধারণ সম্পাদক সুব্রত চৌধুরী বলেন, সবকিছুতে দখলের রাজনীতি শুরু করেছে অবৈধ আওয়ামী সরকার। সর্বশেষ এই জাতি দেখেছে কীভাবে সুপ্রিম কোর্ট দখল করেছে। সংকট উত্তরণে এই সরকারকে বিদায় করতে হবে।
বাংলাদেশ পিপলস পার্টির মহাসচিব আবদুল কাদের বলেন, এই সরকার বলে উন্নয়নের মহাসড়কে বাংলাদেশ পৌঁছে গেছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, টিসিবির লাইনে ভোর ৪টা থেকে দাঁড়িয়ে থাকে সাধারণ মানুষ একটু কম দামে পণ্য কেনার জন্য। শেয়ারবাজার, নির্বাচন ব্যবস্থা, গণতন্ত্র ধ্বংস করার জন্য এই সরকার দায়ী।
গণফোরামের ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুহাম্মদ রওশন ইয়াজদানীর সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন গণফোরামের একাংশের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক, অ্যাডভোকেট মহিউদ্দিন আবদুল কাদের, সভাপতি পরিষদ সদস্য আবদুল হাসিব চৌধুরী, খান সিদ্দিকুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব খান ফারুক, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট তারিকুর রউফ, খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আলীনূর খান বাবুল, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা হাসান, তথ্য ও গণমাধ্যম সম্পাদক মুহাম্মদ উল্লাহ মধুসহ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
এ ছাড়া বাংলাদেশ পিপলস পার্টির কো-চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রণো, প্রেসিডিয়াম সদস্য মোস্তফা কামাল, নাজমা আক্তার, রানি শেখ, সাংগঠনিক সম্পাদক ইব্রাহীম খলিল, জসিম উদ্দিনসহ কেন্দ্রীয় নেতারা বক্তব্য দেন।