
সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি গ্রেপ্তার হয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেছেন, ‘পুলিশের বিরুদ্ধে মাহি যে অভিযোগ (ঘুষ নেওয়ার) করেছেন সেটি সঠিক কিনা তদন্তেই বেরিয়ে আসবে।’
আজ শনিবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকরা চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহির গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ফেসবুকে লাইভে এসে মাহিয়া মাহি কিছু বক্তব্য দিয়েছেন, এজন্য মামলা হয়েছে। আমি সবকিছু জানি না, শুনেছি। বিষয়টি ভালো করে জেনে বলতে হবে।’
মাহি তার স্বামী রকিব সরকারের সঙ্গে ওমরাহ হজ পালনের জন্য সম্প্রতি সৌদি আরব গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফেরার সময় বেলা পৌনে ১২টার দিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে তার সঙ্গে দেশে ফেরেননি রকিব। তিনি গাজীপুর মহানগরীর বাসন থানা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। পরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পুলিশের করা মামলায় মাহিকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে গতকাল শুক্রবার গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজের পূর্ব পাশের একটি বিতর্কিত জমি এবং গাড়ির শোরুম পুলিশ দেড় কোটি টাকা ঘুষের বিনিময়ে দখল করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন চিত্রনায়িকা মাহিয়া মাহি। তিনি গাজীপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মোল্যা নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে ফেসবুক লাইভে এসব অভিযোগ করেন।
ফেসবুক লাইভে মাহিয়া মাহি বলেন, ‘আমি এবং আমার হাজব্যান্ড ওমরাহ পালনে সৌদি আরবে রয়েছি। বিষয়টি হচ্ছে, গাজীপুর পুলিশ কমিশনারকে নিয়ে আমি কমপ্লেইন (অভিযোগ) করতে চাই। আমাদের একটি গাড়ির শোরুম আছে—ভাওয়াল কলেজের পাশে সনিরাজ কার প্লেস। এই শোরুম নিয়ে অনেক দিন ধরে অনেকে প্রবলেম করছে। এখানে একটি লোক আছে—ইসমাইল হোসেন ওরফে লাদেন। উনি গাজীপুর কমিশনারকে... গাজীপুরের কমিশনার অনেক দিন ধরেই আমার হাজব্যান্ড ও তার ফ্যামিলি, মানে এখানে সুলতান ভাই আছেন, ফয়সাল ভাই আছেন, সবার পেছনে লেগেছেন। সুলতান সরকারের ভাই হিসেবে রকিব সরকারের বিরুদ্ধে লেগেছেন। তো, তিনি দেড় কোটি টাকা ঘুষ খেয়ে আমাদের শোরুম দখল করে দেওয়ার জন্য তার অতিরিক্ত কমিশনার দেলোয়ারের মাধ্যমে টাকা নিয়েছেন, আমাদের শোরুমটি দখল করে দেবেন এই মর্মে। আমরা এ জন্য পুলিশ কমিশনারের কাছে গিয়েছি, বিষয়টি এ রকম কিনা জিজ্ঞেস করেছি। কিন্তু তিনি বারবার জমির কাগজপত্র চেয়েছেন। কিন্তু পুলিশ কেন জমির কাগজপত্র নিয়ে ডিল করবে, এটি পুলিশের কাজ না। জায়গা-জমির বিষয়টি হবে আদালতের মাধ্যমে। আদালত রায় দেবেন।’
১২ মিনিটের ফেসবুক লাইভে পুলিশের বিরুদ্ধে অসহযোগিতার অভিযোগ এনে মাহি বলেন, ‘আমরা থানায় জিডি করতে গেলে ওসি প্রথম দিন জিডি নেননি। আমাদের একটি ফেক জিডির কাগজ দিয়েছেন। জিডি না নেওয়ায় পুলিশ কমিশনার অ্যাকটিং (অভিনয়) করে ওসিকে কিছুদিনের জন্য প্রত্যাহার করেন। এখন আবার ক্লোজড উঠিয়ে নিয়েছেন। আমি লাইভ করছি, আগামীকাল আমি দেশে আসব। বাংলাদেশে এসে আমি এটি নিয়ে তুলকালাম করে ফেলব।’ তিনি বলেন, ‘দখলকারীরা দা-চাপাতি নিয়ে ঘটনাস্থলে আছে। কিন্তু কমিশনারকে বারবার ফোন দিলেও তিনি কেটে দিচ্ছেন। এ সময় তিনি তার অনুসারীদের ঘটনাস্থলে গিয়ে দখলকারী লোকজনের ভিডিও করতে নির্দেশ দেন।’ ফেসবুকে লাইভের শেষে পুলিশ কমিশনারকে মেইন কালপ্রিট বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মাহিয়া মাহি।