প্রধানমন্ত্রীর নিরলস প্রচেষ্টায় দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রয়েছে : স্পিকার

মঙ্গলবার আইএমএফের প্রতিনিধি দল স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে 
সাক্ষাৎ করে।
মঙ্গলবার আইএমএফের প্রতিনিধি দল স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে।ছবি : সংগৃহীত

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক সংকট সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রীর নিরলস প্রচেষ্টায় দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রয়েছে।

আজ মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর অন্তোনিয়েতে মোনসিও সাইয়েহর নেতৃত্বে সংস্থার একটি প্রতিনিধি দল তার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তিনি এ কথা বলেন।

প্রতিনিধি দলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন আইএমএফের অ্যাডভাইজর টু ডিএমডি আমিনা লেহরিচি, ডেপুটি ডিরেক্টর এনি মেরি গাল্ডি, মিশন চিফ রাহুল আনন্দ, বাংলাদেশ ও ভুটানের আবাসিক প্রতিনিধি জায়েন্দু দে।

সাক্ষাৎকালে তারা বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন, সাম্প্রতিক বৈশ্বিক সংকট, উন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উত্তরণে আইএমএফের সহযোগিতা, জলবায়ু পরিবর্তন, বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকি ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

স্পিকার বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরলস প্রচেষ্টায় করোনা ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অনেক দেশের অর্থনীতি হিমশিম খেলেও বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল রয়েছে।

তিনি বলেন, দেশে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা আনয়নের পাশাপাশি শতভাগ বিদ্যুতায়ন, মাতৃস্বাস্থ্য সুরক্ষা, মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রদান, প্রায় এক কোটি মেয়ে শিক্ষার্থীকে মোবাইলে অর্থ পাঠানোর মাধ্যমে বৃত্তি প্রদান, নারীদের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন, শিক্ষাক্ষেত্রে নারীদের অভূতপূর্ব অগ্রগতি, তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নারীদের দক্ষতা উন্নয়ন, ‘ডেল্টাপ্ল্যান-২১০০’ প্রণয়ন ইত্যাদি ক্ষেত্রে সফলতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে বর্তমান সরকার।

স্পিকার বলেন, সরকার দারিদ্র্য দূরীকরণ ও খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্যে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচি হাতে নেওয়ার পাশাপাশি হতদরিদ্র মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সামাজিক সুরক্ষা জালের আওতা বর্ধিতকরণ এবং টিসিবি ও ভিজিএফ কার্ডের মাধ্যমে তাদের মাঝে খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিস বিতরণের মতো নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলেও জনগণের জীবনমান সুরক্ষা নিশ্চিত করেছে বর্তমান সরকার।

বাংলাদেশের অভূতপূর্ব অগ্রগতির প্রশংসা করে ডিএমডি অন্তোনিয়েতে মোনসিও সাইয়েহ বলেন, আইএমএফ দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার। ২০৪১ সাল নাগাদ একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও উচ্চ আয়ের দেশে উত্তরণে আইএমএফ বাংলাদেশকে তার সহায়তা অব্যাহত রাখবে। সমগ্র বিশ্ব কোভিড-১৯ এর অভিঘাতের কারণে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে, পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কঠিন পরিস্থিতি বিরাজ করছে। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের মতো উদীয়মান অর্থনৈতিক দেশগুলো মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত চাপ, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ সংক্রান্ত নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। এসব সমস্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রচেষ্টায় আইএমএফ পাশে থাকবে বলে দৃঢ় আশ্বাস দেন তিনি।

বর্তমান সংকটকালীন সময়ে আইএমএফ বাংলাদেশকে যে ঋণ সহায়তা দিতে যাচ্ছে তা যথাসময়ে পরিশোধের সক্ষমতা বাংলাদেশের রয়েছে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি। এ ক্ষেত্রে প্রয়োজনে বিদ্যমান আইনের সংশোধন কিংবা নতুন আইন প্রণয়নে প্রয়োজনীয় সহযোগিতার আশ্বাস দেন স্পিকার।

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের অনুমিত হিসাব, সরকারি হিসাব ও সরকারি প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সঙ্গে ভবিষ্যতে আইএমএফ প্রতিনিধি দলের সভা ও সেমিনার আয়োজনের অনুরোধ জানান স্পিকার।

তিনি বলেন, আইএমএফ বাংলাদেশকে যে সহযোগিতা দিচ্ছে সে বিষয়ে সংসদ সদস্যদের আইএমএফের রিসোর্স পারসন দ্বারা ওরিয়েন্টেশনের মাধ্যমে অবহিত করলে সংসদ সদস্যরা অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে।

এ সময় বাংলাদেশ সফরের জন্য প্রতিনিধি দলকে ধন্যবাদ জানান স্পিকার। সংসদ সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com