জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস পালিত

শুক্রবার ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।
শুক্রবার ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান।ছবি : সংগৃহীত

বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে জাতীয় দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবস-২০২৩ পালিত হয়েছে। দিবসটি উদযাপনের অংশ হিসেবে আজ শুক্রবার ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ভৌগোলিক কারণে বাংলাদেশে প্রতিনিয়তই বিভিন্ন দুর্যোগ আঘাত হানে। প্রতিবছর বন্যা, ঘূর্ণিঝড়, ভূমিধস, বজ্রপাতসহ নানাবিধ দুর্যোগ আমরা মোকাবিলা করে চলেছি। করোনাকালীন ২০২০-২১ সালে প্রায় সাত কোটি মানুষকে মানবিক সহায়তা দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন অনেকেই লজ্জায় সাহায্য চাইতে পারে না। তাদের কথা ভেবে আমরা ৩৩৩ সেবা চালু করেছিলাম, এ সেবার মাধ্যমে প্রায় ২২ লাখ পরিবার মানবিক সহায়তা পেয়েছে। করোনা দুর্যোগের পাশাপাশি আমরা ঘূর্ণিঝড় আম্পান, ইয়াস, সিত্রাংও মোকাবিলা করেছি। ২০২২ সালে ঘটে যাওয়া সিলেট অঞ্চলের ভয়াবহ বন্যা সফলভাবে মোকাবিলা করা হয়েছে। আমরা ৬৪টি জেলায় ৬৫টি জেলা ত্রাণ গুদাম কাম দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্যকেন্দ্র  তৈরি করেছি।

এনামুর রহমান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কর্মসূচির মূল ভিত্তি গড়ে গেছেন। তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্ব ও সুশাসনে আজ তা এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে। দুর্যোগ মোকাবিলায় দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা, পরিশ্রম, দূরদর্শী পরিকল্পনা ও নতুন নতুন কৌশলকে কাজে লাগিয়ে বর্তমান সরকার আজ দেশকে সারা বিশ্বের কাছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় অনুকরণীয় রোগ মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

তিনি বলেন, সম্প্রতি তুরস্ক ও সিরিয়ায় সংঘটিত ভয়াবহ ভূমিকম্পের ফলে বাংলাদেশ থেকে উদ্ধারকারী দল ও মানবিক সহায়তা পাঠানো হয়েছে। এতে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরও উজ্জ্বল হয়েছে। বিগত মুজিব বর্ষে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে দুর্যোগ মোকাবিলায় আমাদের সক্ষমতা আরও অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা সংবন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য চীন সরকারের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় ন্যাশনাল ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার (এনইওসি) প্রতিষ্ঠার কাজ শুরু করেছি। আগামী ১৪ মার্চ ফিসিবিলিটি স্টাডি করতে চীনের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে আসবে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া সংগঠন ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) কার্যক্রম ও সক্ষমতা বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে সিপিপির স্বেচ্ছাসেবক সংখ্যা ৭৬ হাজার ১৪০ জন, যার অর্ধেক নারী এবং এর মাধ্যমে নারীর ক্ষমতায়নকে সুনিশ্চিত করা হয়েছে । জনসেবায় অবদান রাখার জন্য ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি জাতিসংঘের সম্মানজনক ‘জাতিসংঘ জনসেবা পদক-২০২১’ অর্জন করেছে। সিপিপি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নারীর ক্ষমতায়ন উদ্যোগের স্বীকৃতি স্বরূপ এসডিজি অর্জনে জেন্ডার রেস্পন্সিপ সেবা ক্যাটাগরিতে এ পদক দেওয়া হয়েছে।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি তাজুল ইসলাম এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. মিজানুর রহমান বক্তব্য দেন।

আলোচনা সভা শেষে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) স্বেচ্ছাসেবকদের মাঝে পুরস্কার ও সনদপত্র বিতরণ করেন প্রতিমন্ত্রী।

এ ছাড়া সুভেনির প্রকাশ, ভিডিও ক্লিপ প্রদর্শন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন, সিপিবির স্বেচ্ছাসেবক পুরস্কার বিতরণ, ক্রোড়পত্র প্রকাশ, আলোচনা অনুষ্ঠান, গোলটেবিল বৈঠক, ভূমিকম্প ও অগ্নিকাণ্ডবিষয়ক সচেতনতা বৃদ্ধি মহড়া, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার ইত্যাদি কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি উদযাপন করা হয়েছে।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com