খুলনার বহুল আলোচিত রহিমা বেগম অপহরণ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা দিয়েছে পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)। গতকাল সোমবার খুলনা মহানগর হাকিম আদালতে এ প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়।
প্রতিবেদনে রহিমা বেগম অপহরণ কাণ্ডকে নাটক আখ্যায়িত করে মরিয়ম মান্নান ও তার বোন আদুরী আক্তারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। পিবিআই কার্যালয়ে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান এসব তথ্য জানিয়েছেন।
ব্রিফিংয়ে রহিমা বেগম অপহরণকে দেশের আলোচিত নাটক আখ্যায়িত করে মুশফিকুর রহমান বলেন, পিবিআই ঘটনাটি বেশ কিছুদিন ধরে তদন্ত করে। পরে হেডকোয়ার্টারে এই প্রতিবেদন অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়। অনুমোদন শেষে এটি পিবিআই কার্যালয়ে আসার পর সোমবার খুলনার মহানগর হাকিম আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।
ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার জানান, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর জন্য মেয়ে মরিয়ম মান্নান মা রহিমা বেগমকে অপহরণের ঘটনা সাজিয়েছে। রহিমাকে অপহরণের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। তিনি স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে ছিলেন। বিভিন্ন স্থানে ঘুরে নিজেকে আড়াল করেছেন। ২৮ দিন এভাবে নিজেকে লুকিয়ে রেখেছেন।
পিবিআই বলছে, ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট রাতে মহেশ্বরপাশার বণিকপাড়া থেকে রহিমা বেগম নিখোঁজের কথা বলা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে অপহরণের অভিযোগ এনে তারই ছেলে মিরাজ আল সাদী সাধারণ ডায়েরি করেন। রহিমাকে অপহরণ করা হয়েছে এমন অভিযোগ এনে থানায় মামলা করেন মেয়ে আদুরী আক্তার। আর মরিয়ম মান্নান মায়ের অপহরণ নাটক সাজিয়ে গোটা দেশ তোলপাড় করে ফেলেন। তবে শেষ পর্যন্ত পুলিশ তাকে ফরিদপুর জেলার বোয়ালমারী থেকে উদ্ধার করে খুলনায় নিয়ে আসে। উদ্ধারকালে রহিমা বেগম ছিলেন সম্পূর্ণ অক্ষত। তবে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে তিনি একেবারে চুপ হয়ে যান। বাকরুদ্ধের মতো আচরণ করেন।
এদিকে রহিমা অপহরণ কাণ্ডের সন্দেহভাজন হিসেবে যারা মামলার আসামি ছিলেন তারা রহিমাদের প্রতিবেশী। তাদের মধ্যে রয়েছেন মঈন উদ্দিন, গোলাম কিবরিয়া, রফিকুল ইসলাম মোহাম্মদ জুয়েল ও হেলাল শরীফ। তারা বর্তমানে জামিনে আছেন।