
বাংলাদেশে বিভিন্ন সাইবার অপরাধের শিকার ভুক্তভোগীদের মধ্যে ১৪ দশমিক ৮২ শতাংশের বয়স ১৮ বছরের নিচে তথা শিশু। এসব শিশু সাইবার জগতে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সব থেকে বেশি অপরাধের শিকার হন। ফলে সাইবার জগতে এখনো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে শিশুরা।
আজ শনিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন (সিক্যাফ) প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ সাইবার অপরাধপ্রবণতা-২০২৩’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে আসে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সাইবার বুলিংয়ের মতো অপরাধ কমলেও শিশুদের প্রতি হওয়া সাইবার অপরাধ কমেনি। ২০২৩ সালের জরিপে ভুক্তভোগীদের ১৪ দশমিক ৮২ শতাংশের বয়সই ১৮ বছরের নিচে, যা ২০১৮ সালের জরিপের তুলনায় ১৪০ দশমিক ৮৭ শতাংশ বেশি। এর মধ্যে ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিকমাধ্যমে সবচেয়ে বেশি (২ শতাংশের বেশি) অপপ্রচারের শিকার হয় শিশুরা। বয়সভিত্তিক অপরাধের ধরনে ভুক্তভোগীদের মধ্যে তরুণরা (১৮-৩০ বছর) সর্বোচ্চ ১২ শতাংশের বেশি একই ধরনের অপরাধের শিকার হয়ে থাকেন। সাইবার বুলিংয়ের মতো অপরাধ ২০২২ সালে ৫২ দশমিক ২১ শতাংশ যেখানে ২০১৭ সালে ছিল ৫৯ দশমিক ৯০ শতাংশ।
পাশাপাশি প্রতিবেদনে ২০১৫-২০২৩ সালের মার্চ পর্যন্ত সময়ের পরিসংখ্যান পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে বেশ কয়েকটি গ্র্যাফে। সেখানে ১১টি ট্যাবে করা তথ্য বিশ্লেষণে ‘অন্যান্য’ অপরাধের মাত্রা ক্রমেই বাড়ছে বলে দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ২০২২ সালের প্রতিবেদনে যেখানে অন্যান্য অপরাধ ছিল ১ দশমিক ৮১ শতাংশ, ২০২৩ সালে প্রতিবেদনে এটি ৩৮১ দশমিক ৭৬ শতাংশ বেড়ে ৬ দশমিক ৯১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এসব অপরাধের মধ্যে রয়েছে নানা মাত্রিক প্রতারণা। এই প্রতারণা চাকরি দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস এবং অ্যাপ ব্যবহারের মাধ্যমে হচ্ছে বলে সিক্যাফের প্রতিবেদনে উঠে আসে।
সামাজিক মাধ্যমসহ অন্যান্য আইডি হ্যাকিংয়ের ঘটনাগুলোও ধারাবাহিকভাবে কমলেও আর্থিক প্রতারণা থেমে নেই। ২০২২ সালে ভুক্তভোগীদের ১৪ দশমিক ৬৪ শতাংশই অনলাইনে পণ্য কিনতে গিয়ে প্রতারণার শিকার হয়েছেন। অপরদিকে ভুক্তভোগীদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের আইডি হ্যাকিংয়ের শিকার সর্বোচ্চ ২৫ দশমিক ১৮ শতাংশই নারী। তারপরও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে অভিযোগের হার দিন দিন কমছে।
সিক্যাফ বলছে, ২০১৮ থেকে পাঁচটি জরিপে সাইবার অপরাধের শিকার ভুক্তভোগীদের মাঝে কতজন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অভিযোগ করেছেন, তার ফলাফল উদ্বেগজনক। জরিপে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ভুক্তভোগীদের মধ্যে অভিযোগকারীর সংখ্যা দিন দিন কমছে। ২০১৮ সালের জরিপে যেখানে অভিযোগকারীর শতকরা হার ছিল ৬১ শতাংশ, ২০২৩ এ তা কমে ২০ দশমিক ৮৩ শতাংশে নেমেছে।