বিস্ফোরণ এড়াতে জাতীয় সমন্বয় কমিটি চায় রসায়ন সমিতি

বুধবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে রসায়ন সমিতির নেতারা।
বুধবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে রসায়ন সমিতির নেতারা।ছবি : কালবেলা

বিস্ফোরণ এড়াতে বিপজ্জনক রাসায়নিকের যথাযথ ব্যবস্থাপনার জন্য পর্যাপ্ত ক্ষমতা প্রদান করে জাতীয় কেমিক্যাল সমন্বয় কমিটি গঠন করাসহ ১৪টি সুপারিশ তুলে ধরেছে বাংলাদেশ রসায়ন সমিতির চট্টগ্রাম অঞ্চল।

আজ বুধবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব সুপারিশ তুলে ধরা হয়। সম্প্রতি ঢাকা-চট্টগ্রামে একের পর এক বিস্ফোরণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এবং প্রাণহানির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন সমিতির নেতারা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঘটে যাওয়া বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটেছে সচেতনতা এবং মানসম্মত ব্যবস্থাপনা সিস্টেমের অভাবে। কাজেই সচেতনতা ও কঠোর মনিটরিংয়ের মাধ্যমে ভয়াবহ বিস্ফোরণ এড়ানো সম্ভব।

বাংলাদেশ রসায়ন সমিতির চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি মো. জাফর আলম বলেন, ‘আবদ্ধ স্থানে জমাটবদ্ধ বিপজ্জনক কেমিক্যালস গুদামজাতকরণ, স্থানান্তর ও পরিবহন, সেপটিক ট্যাংকের গ্যাসে প্রাণহানি, এলএনজি, সিএনজি প্রভৃতির অনিরাপদ ব্যবহার, বসতবাড়ি, শিল্পপ্রতিষ্ঠানে প্রাকৃতিক গ্যাস ও রাসায়নিকের ব্যবহারে জনসচেতনতা সৃষ্টি করে দুর্ঘটনা এড়ানো যেতে পারে।’

সমিতির সুপারিশগুলো হলো- বাসাবাড়িতে গ্যাসের সংযোগস্থানে গ্যাস ডিটেক্টর সংযোগ করা, আবাসিক অধিবাসীদের ভবনের যথাস্থানে গ্যাস ডিটেক্টর স্থাপন করে ইমার্জেন্সি রেসপন্স প্ল্যান অনুযায়ী ড্রিল পরিচালনা করে এ সংক্রান্ত তথ্য সংরক্ষণ করা, প্রাকৃতিক গ্যাসের সংযোগ লাইন ব্যবহারকারী ও সংযোগ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান থেকে নির্দিষ্ট সময় শেষে পরীক্ষা করে নবায়ন সনদ দেওয়া, প্রতিটি এলাকার জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত টেকনিশিয়ান ও কর্মকর্তার নাম-ঠিকানা সর্বসাধারণকে জানানোর ব্যবস্থা করা, বহুতল ভবনের জন্য নকশা অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে ইমার্জেন্সি রেসপন্স প্ল্যান প্রস্তুত করা, ম্যানুয়াল এবং অদক্ষ শ্রমিক দ্বারা কোনো অবস্থাতেই সেপটিক ট্যাংক পরিষ্কার না করানো এবং এ বিষয়ে কঠোর আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ এবং প্রতি তিন বছর পর সেপটিক ট্যাংক আদর্শ উপায়ে পরিষ্কার করা, আবাসিক পর্যায়ে বিপর্যয় সম্পর্কে আলোচনা করে ইমার্জেন্সি রেসপন্স প্ল্যান সম্পর্কে ধারণা দেওয়া, সরকারি ও স্থানীয় সরকার সংস্থার অধীনে এনফোর্সমেন্ট ও মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত প্রশিক্ষিত জনবল তৈরি করা, বিপজ্জনক কেমিক্যালের ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের কার্যক্রমের দ্বৈধতা পরিহার করে ওয়ান স্টপ সার্ভিস আইন-২০১৮ এর অধীন কেমিক্যাল রেজিস্ট্রেশন ও ডাটাবেজ প্রস্তুত করে ওয়ান স্টপ সার্ভিস ব্যবহার করা;

বিপজ্জনক রাসায়নিকের যথাযথ ব্যবস্থাপনার জন্য পর্যাপ্ত ক্ষমতা প্রদান করে জাতীয় কেমিক্যাল সমন্বয় কমিটি গঠন করা, কেমিক্যাল সেফটির জন্য জাতীয় প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে বিপজ্জনক কেমিক্যালের  পরিবহন; গুদামজাতকরণ; ব্যবহার বিধি, সংশ্লিষ্ট সব অংশীজন ও রেগুলেটরি সংস্থার ব্যক্তিদের প্রশিক্ষণ দেওয়া, শিক্ষাবিদ গবেষক শিল্পপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্তদের সমন্বয়ে ত্রিপক্ষীয় পরামর্শক কমিটি গঠন করে দুর্ঘটনায় বিশেষজ্ঞ পরামর্শ গ্রহণ করা, এনফোর্সম্যান অ্যান্ড মনিটরিং সংস্থার কাছে বিপজ্জনক কেমিক্যালসের পর্যাপ্ত টেস্টিং কিট রাখা এবং আমদানি, রপ্তানি, পরিবহন, গুদামজাতকরণ-প্রত্যেক ক্ষেত্রেই বিপজ্জনক কেমিক্যালসের জন্য আন্তর্জাতিক লেভেল যুক্ত পদ্ধতি অনুসরণ। এসব বিষয়ে অংশীজনদের স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং পদ্ধতিবিষয়ক প্রশিক্ষণ এবং ড্রিল অনুশীলনকরণ।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com