
নাগরিকদের নিরাপদ জীবনযাপনের স্বার্থে ঢাকা সিটি করপোরেশনের প্রত্যেক ওয়ার্ডের স্থাপনা ও ভবনের সুয়ারেজ (পয়ঃনিষ্কাশন) লাইন ও গ্যাসলাইন নিয়মিত পর্যবেক্ষণে সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। সাত দিনের মধ্যে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) চেয়ারম্যান, তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে এ কমিটি করতে বলা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন। বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠনের পর পর্যবেক্ষণে পয়ঃনিষ্কাশন লাইন ও গ্যাসলাইনের কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি ধরা পড়লে তা মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কমিটিকে প্রতি ৮ সপ্তাহ পর পর এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিলেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকার একটি তিনতলা ভবন ও গুলিস্তানের সিদ্দিকবাজারের একটি সাততলা ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা উল্লেখ করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে ১২ মার্চ রিটটি করা হয়। মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ এই রিট করে।
আজ মঙ্গলবার আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল তৌফিক সাজাওয়ার।
ঢাকা সিটিতে অবস্থিত ভবন-স্থাপনাগুলো নিয়মিত তদারকি ও সিটিতে বসবাসকারীদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। গণপূর্ত সচিব, বিদ্যুৎ সচিব, স্থানীয় সরকার সচিব, রাজউক চেয়ারম্যান, তিতাস গ্যাস ও ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ বিবাদীদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
পরে আইনজীবী মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, সায়েন্স ল্যাবরেটরি ও সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণের ঘটনার প্রধান কারণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলোর অবহেলা। ঢাকা শহরে থাকা হাজার হাজার স্থাপনা বা ভবনের পয়ঃনিষ্কাশন ও গ্যাসের লাইন তদারকি, রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলো এ বিষয়ে সক্রিয় নয়। যে কারণে রিটটি করা হয়। দুই সিটি করপোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডের গ্যাস ও পয়ঃনিষ্কাশন লাইন তদারকির জন্য সাত সদস্যের একটি করে কমিটি গঠন করে কার্যক্রম শুরু করতে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান এই আইনজীবী। তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ওয়ার্ডের জন্য সাত সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি থাকবে। আট সপ্তাহ পর অগ্রগতি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’