সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খানের বিরুদ্ধে ইন্টারপোল ‘রেড নোটিশ’ জারির এক দিনের মাথায় দুবাই পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন বলে গুঞ্জন ওঠেছে। গতকাল রাতেই দুবাই পুলিশ তাকে আটক করে বলে জানা জানা গেছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একটি সূত্র দৈনিক কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন। তবে অনুষ্ঠানিকভাবে কেউ নিশ্চিত করেনি। পুলিশের ওই কর্মকর্তা বলেছেন আগামী দুই একদিনের মধ্যে পুলিশের একটি দল তাকে ফিরিয়ে আনতে যাবে।
এর আগে গতকাল পুলিশের মহাপরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, আরাভ খানের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে ইন্টারপোলের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। ইন্টারপোল সেই আবেদন গ্রহণ করেছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে গত সপ্তাহে এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আরাভ জুয়েলার্সের উদ্বোধন করার পর ব্যাপক আলোচনা আসে জুয়েলার্সের মালিক আরাভ খানকে নিয়ে। ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ক্রীড়া ও বিনোদন জগতের অনেক তারকাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ফেসবুকে একাধিক পোস্ট দিয়েছিলেন আরাভ খান। সেই তাকে পুলিশ সদস্য হত্যা মামলার আসামি বলে শনাক্ত করে ফেলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা।
গোয়েন্দা পুলিশের তথ্য মতে, আরাভ জুয়েলার্স নামের ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক আরাভ খানের আসল নাম রবিউল ইসলাম। বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তার বাড়ি। তিনি সোহাগ মোল্লা, হৃদয় শেখ, আপন—এরকম কয়েকটি নামেও পরিচিত। ২০১৮ সালের ৭ জুলাই ঢাকায় পুলিশের পরিদর্শক মামুন এমরান খান খুন হন। সেই খুনের আসামি হয়ে দেশ ছেড়েছিলেন রবিউল।
Link a Story
আরাভের টাকার উৎস খুঁজছে সিআইডি
আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি সূত্র জানায়, ওই খুনের ঘটনার পরে অন্য আসামিদের সঙ্গে আরাভকে আটক করেছিল ডিবি পুলিশ। ডিবি পুলিশ কার্যালয়ে দুদিন রাখার পর তাকে পুলিশের এক উচ্চপদস্থ কর্তার অনুরোধে ছেড়ে দেওয়া হয়। চার দিন ধরে বিষয়টি নিয়ে দেশের একাধিক গণমাধ্যম এসব তথ্য প্রকাশ করছে। এরপরই আইজিপি গতকাল এ বিষয়ে মুখ খোলেন।
মামলা ও নথিপত্র সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালে বনানীর একটি ফ্ল্যাটে জন্মদিনের দাওয়াতে গিয়ে খুন হন পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) কর্মকর্তা মামুন ইমরান খান। গুম করতে লাশ গাড়িতে করে নেওয়া হয় গাজীপুরের কালীগঞ্জের একটি জঙ্গলে। সেখানে লাশে পেট্রোল ঢেলে আগুনে ঝলসিয়ে দেওয়া হয় চেহারা। সেই হত্যা মামলার অভিযোগপত্র অনুযায়ী পলাতক আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আপন।
এ ঘটনায় ওই বছরের ১০ জুলাই মামুনের ভাই ঢাকার বনানী থানায় মামলা করেন। এ মামলায় ২০১৯ সালের ৩১ মার্চ অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
মামলা ও নথিপত্র সূত্রে জানা যায়, নারীদের টোপ হিসেবে ব্যবহার করে বিত্তশালীদের ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া একটি চক্রের কবলে পড়েন মামুন ইমরান খান। এরপর তাকে ধরে নিয়ে হত্যার পর পেট্রোল ঢেলে লাশ পুড়িয়ে গাজীপুরের জঙ্গলে ফেলে দেয় হত্যাকারীরা। এ মামলার ৬ নম্বর আসামি হলেন আরাভ খান।
Link a Story
আরাভের বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশ জারি