ডিবি পুলিশের পরিচয় দিয়ে সৌদিপ্রবাসী কাছ থেকে নগদ ১৭ লাখ টাকা ও একটি আইফোন ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনার দীর্ঘ ১ মাস ৮ দিন পর অবশেষে নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি তপু চন্দ্র ঘোষসহ চার ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, তপু তার সহযোগীদের নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশের পরিচয় দিয়ে এক সৌদিপ্রবাসীর ১৭ লাখ টাকা লুট করেছেন৷ গ্রেপ্তার হওয়ার পর রোববার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দিয়েছেন আসামিরা৷
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৪ এপ্রিল বন্দর উপজেলার বন্দর ইউনিয়নের হাজী সাহেবের মোড় এলাকায় ছিনতাইয়ের শিকার হন সৌদিপ্রবাসী উজ্জ্বল হোসেন৷ ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে আসামিরা তার কাছ থেকে ১৭ লাখ টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়৷ দুদিন পর বন্দর থানায় ছিনতাইয়ের অভিযোগে অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগী ওই সৌদিপ্রবাসী৷
মামলাটির তদন্তের কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক রেজাউল করিম জানান, তদন্তে তপু চন্দ্র ঘোষসহ তার সহযোগীদের সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ৷ অধিকতর তদন্তের পর আসামিদের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে গত শনিবার রাতে সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ছিনতাইকারী চক্রের মূল হোতা তপু ও তার তিন সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ গ্রেপ্তার চারজন সরাসরি এ ছিনতাইয়ের ঘটনার সঙ্গে জড়িত৷ তারা দিনের বেলা ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে সৌদিপ্রবাসীর টাকা ও মোবাইল লুট করে বলে আদালতে ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দিতে স্বীকার করেছেন৷
গ্রেপ্তার অন্য তিন আসামিরা হলেন সোনারগাঁ উপজেলার ছোট অর্জুনদি গ্রামের এলাকার জাকির হোসেনের ছেলে রোহান (২১), একই উপজেলার বড়নগর এলাকার শুভঙ্কর চন্দ্র রাজবংশীর ছেলে কৃষ্ণচন্দ্র রাজবংশী (৩২), বগুড়া জেলার শেরপুরের খাজা আশ্রমপাড়া এলাকার চাঁন শেখ মিয়ার ছেলে এরশাদ (২৪)৷
তপুর অপর সহযোগী গ্রেপ্তার রোহান সোনারগাঁয়ে ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী বলে পরিচিত বলে জানান স্থানীয় লোকজন৷
পুলিশ জানায়, ছিনতাইকারী এ চক্রটির নেতা তপু চন্দ্র ঘোষেরও বাড়ি সোনাগাঁয়ের মোগরাপাড়া ইউনিয়নের অর্জুনদি গ্রামে৷ সে ওই গ্রামের সাধন চন্দ্র ঘোষের ছেলে৷
স্থানীয়রা জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পাশে মোগরাপাড়ায় ‘লন্ডন জুস বার অ্যান্ড ক্যাফ’ নামে তপুর একটি ফাস্টফুডের দোকান রয়েছে৷ গত মাসে দোকানটির কার্যক্রম শুরু করেন তপু৷
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা ছাত্রলীগের এক নেতা কালবেলাকে জানান, তপুর গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিয়ে ছাত্রলীগ বিব্রত৷ তপুর শক্ত কোন রাজনৈতিক ব্যাকগ্রাউন্ড নেই৷ পদ দেওয়ার সময় ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করে নিলে দলের এমন পরিস্থিতিতে পড়তে হয় না৷
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আজিজুর রহমান আজিজ কালবেলাকে বলেন, আমরা তপু চন্দ্র ঘোষের গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়টি শুনেছি৷ সে জেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি পদে আছেন৷ এ বিষয়ে এখন কোনো মন্তব্য করতে পারছি না৷ বিষয়টি নিয়ে সংগঠন সিদ্ধান্ত নেবে৷