দুই সপ্তাহ হতে চলল বৃষ্টির দেখা নেই। দাবদাহে জনজীবন হাঁসফাঁস। বেলা বাড়তেই রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। ঈদের বাজারেও তার প্রভাব পড়ছে। আবার বিদ্যুৎ গোলযোগের কারণে গ্রাম পর্যায়ে ঘরে থাকাও দায় হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে বিত্তবানদের এসির ব্যবস্থা থাকলেও গরিবের ভরসা চার্জার ফ্যান। কিন্তু চাহিদা বেড়ে যাওয়া চার্জারে ফ্যানের দামেও গরম হাওয়া বইছে।
মূলত লোডশেডিংয়ের কারণে গরমের অস্বস্তি থেকে বাঁচতে চার্জার ফ্যান ব্যবহার বেড়েছে। এই ফ্যানে বিদ্যুৎ না থাকলেও আপনি বাতাস পাবেন। তবে বিদ্যুৎ থাকাকালীন ফ্যানের ব্যাটারি চার্জ দিয়ে রাখতে হবে। পরবর্তী সময়ে বিদ্যুৎ চলে গেলে এই ফ্যান বিভিন্ন সময় পর্যন্ত বাতাস দিয়ে থাকে।
বাজারে ভিশন, ওয়ালটন, ক্লিক, সানকা, সিঙ্গারসহ নানা ব্র্যান্ডের চার্জার ফ্যান পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া ছোট ও টেবিল চার্জার ফ্যান রয়েছে বাজারে। কোম্পানিভেদে এসব চার্জার ফ্যানের রয়েছে এক থেকে দুই বছরের ওয়ারেন্টি সঙ্গে গ্যারান্টি। দাম আকারভেদে ২ থেকে ৮ হাজার টাকা পর্যন্ত।
দোকানিরা জানান, ১২ ইঞ্চি আকারের একটি চার্জার ফ্যানের দাম ৪ হাজার টাকা এবং ১৪ ইঞ্চির আকারের একটির দাম ৪ হাজার ৭০০ থেকে ৫ হাজার টাকার মধ্যে পওয়া যাচ্ছে। এর থেকে বড় আকারের চার্জার ফ্যানের দাম ৭ থেকে ৮ হাজার টাকা।
গতকাল রাজধানীর কয়েকটি বাজার ও দোকান ঘুরে দেখা গেছে, গত বছর যেসব চার্জার ফ্যান ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে এ বছর তা বিক্রি হচ্ছে ৪ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকায়। আবার মধ্যম মানের চার্জার ফ্যানের দাম ৭ থেকে ৮ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বাজারে পরিচিত ব্র্যান্ডের সঙ্গে সাধারণ ফ্যানের দামও বেড়েছে অনেক। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়াম, গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া, টিপু সুলতান রোড, বংশাল, বায়তুল মোকাররম ও মালিবাগ-রামপুরা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে দোকানে দোকানে ক্রেতারা ফ্যান কেনার জন্য ভিড় করছে। এর মধ্যে চার্জার ফ্যানের ক্রেতা বেশি। তবে দামের শুনে অনেকে না কিনে চলে যাচ্ছেন। আবার অনেকে বাধ্য হয়ে বেশি দামে কিনছেন।
স্টেডিয়াম মার্কেট থেকে ৪ হাজার টাকায় একটা ১২ ইঞ্চির চার্জার ফ্যান কিনেছেন, জামালপুরের মিনহাজুল ইসলাম। ব্যবসার কাজে ঢাকায় থাকেন। ঈদে বাড়িতে যাবে, মায়ের জন্য চার্জার ফ্যান কিনেছেন। তিনি বলেন, গরমে মায়ের নামাজ পড়তে কষ্ট হয়। বিদ্যুৎ থাকে না। এজন্য ফ্যান কিনলাম। দোকানদার দাম হাঁকিয়েছে সাড়ে ৫ হাজার টাকা। চার্জ থাকবে ৪ ঘণ্টা। দামের বিষয়ে তিনি বলেন, এই ফ্যান গত বছর আড়াই হাজার টাকায় পাওয়া গেছে। কিন্তু এখন অনেক দরদাম করে ৪ হাজার টাকায় কিনলাম।
দোকানিরা জানান, আমদানিকারকরা চার্জার ব্যাটারি ও আনুষঙ্গিক যন্ত্রাংশে দাম বাড়ানোর কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছর ফ্যানের দাম বেড়েছে। তবে গরমের কারণে খুচরা পর্যায়ে অনেক দোকানি বেশি দামের সুযোগ নিচ্ছে বলেও খবর পাওয়া যাচ্ছে।
বাইতুল মোকাররম মার্কেটের মাহি ইলেকট্রনিক্স ফ্যান ব্যবসায়ী আবদুল্লা বলেন, গত সপ্তাহে কাস্টমার বেশি ছিল। এখন সবাই বাড়িয়ে চলে গেছে। বিক্রি কমেছে। দাম বাড়ার বিষয়ে বলেন, দাম তো আমরা বাড়াইনি। কোম্পানি বাড়িয়েছে। আমাদের বিনিয়োগ বেড়েছে। আগের তুলনায় ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পুঁজি বেশি লাগছে।