
বেসরকারি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার মান বেড়েছে। বেসরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবার মানও বাড়াতে হবে। এ ক্ষেত্রে রোগীদের অযথা টেস্ট না দেওয়া ও অতিরিক্ত ওষুধ না লেখার অনুরোধ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত কোভিড মোকাবিলায় বেসরকারি হাসপাতালের স্বীকৃতি প্রদান সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, দেশে ক্যানসার, কিডনি, উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগসহ অন্যান্য অসংক্রামক রোগ প্রতিনিয়ত বাড়ছে। চিকিৎসা ফি যেন বেশি নেওয়া না হয়। কারণ আমাদের দেশের অনেক মানুষ এখনো দরিদ্র। সেই দিকটা আমাদের খেয়াল রাখতে হবে। আবার মানুষের আস্থা না থাকলে কিন্তু সামর্থ্যবানরা বিদেশ চলে যাবে। আমরা চাই না একটি মানুষ দেশের বাইরে চিকিৎসা নিতে চলে যাক।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতিদিন ১০ লাখ মানুষ দেশের সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। সেই হিসাবে বছরে ২৪ কোটি মানুষ চিকিৎসা নেয়। প্রতিজনের পেছনে সরকার গড়ে ৫ হাজার টাকা ব্যয় করলে বছরে ১২ বিলিয়ন ডলার খরচ করতে হচ্ছে। উন্নত বিশ্বে হলে এই চিকিৎসা খরচ অন্তত ৬০ বিলিয়ন ডলার হতো। দেশে ৭২টি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করে যাচ্ছে। আমি জানতে পেরেছি, প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে বছরে এক বিলিয়ন ডলার টার্নওভার করে। বিদেশে হলে অন্তত ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি খরচ করতে হতো। বেসরকারি উদ্যোক্তরা যাতে ভালোভাবে বেসরকারি হাসপাতাল পরিচালনা করতে পারে এজন্য মেডিকেল যন্ত্রপাতি আমদানিতে সরকার অনেক ট্যাক্স কমিয়ে দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, কোভিডকালে কিন্তু দেখেছি এই দেশের সব রোগীকে আপনারাই চিকিৎসা দিয়েছেন। দেশে কিডনি, লিভার ট্রান্সপ্লান্ট হচ্ছে। প্রতি বছর দেশের মেডিকেল কলেজে বিদেশি শিক্ষার্থী পড়াশোনা করতে আসেন। এ খাত থেকে আমরা বৈদেশিক মুদ্রা আয় করি। আমি বিশ্বাস করি, খুব বেশি দূরে নয় বিদেশ থেকেও চিকিৎসা নেওয়ার জন্য এ দেশে রোগী আসবে।
বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এমএ মুবিন খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন—স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিব মো. আজিজুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. টিটু মিয়া, প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ, বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিলের (বিএমআরসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপড ডা. জামাল উদ্দিন চৌধুরী, জাতীয় অধ্যাপক ডা. শাহলা খাতুন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ হাসাপাতাল অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ডা. আনোয়ার হোসেন খান।
অনুষ্ঠানে অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ ও পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. মোস্তাফিজুর রহমানকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হয়। কোভিড হিরো হিসেবে পুরষ্কৃত করা হয়, আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. আনোয়ার হেসেন খান, ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এমএ মুবিন খান, গ্রিন লাইফ মেডিকেল কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. মাইনুল আহসান, ইউনিভার্সাল মেডিকেল কলেজ হসপিটালের চেয়ারম্যান প্রীতি চক্রবর্তী, ইস্ট ওয়েস্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতানের চেয়ারম্যান ডা. মোয়াজ্জম হোসেন, গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. গাজী মিজানুর রহমান, রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল আহসান সরকার, ইস্টওয়েস্ট মেডিকেল কলেজের পরিচালক উলফাত জাহান মুন, রংপুর কমিউনিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান নিলু আহসান ও তায়রুন্নেছা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. হাবিবুল হককে। এ ছাড়া কয়েকটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে সেরা কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে সম্মাননা দেওয়া হয়।