ফলসা নামের ফলটি

চয়ন বিকাশ ভদ্র
ফলসা নামের ফলটি

ফলসা বুনোফল। গ্রামে একসময় প্রচুর দেখা যেত। ইদানীং দুর্লভ হয়ে উঠেছে গাছটি। ফলটি এসেছে এশিয়ার দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল থেকে। হিমালয়ের পাদদেশে ভালো জন্মায়। একসময় পথের ধারে, পতিত জায়গায় এমনিতেই জন্মাত। বীজ ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটি করত পাখিরা। শহরে এ গাছ খুঁজে পাওয়া রীতিমতো ভাগ্যের ব্যাপার।

এ ফল বেশি পছন্দ করে কাকেরা। ফলসা পাকার মৌসুমে সারা দিনই কাকের আনাগোনা চোখে পড়ে। আরও অনেক প্রাণী এ ফল খায়।

বড় বড় পাতার এ গাছ ডালপালা ছড়িয়ে ছাতার মতো দাঁড়িয়ে থাকে। সারা বছর তামাটে রঙের নতুন পাতা এ গাছের অন্যতম বৈশিষ্ট্য।

ফলসা মাঝারি আকারের পাতাঝরা গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম গ্রিউইয়া এসিয়াটিকা। পাট আর ফলসা কিন্তু একই গোত্রের। এটি ৬-৭ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। ফলসার পাতা কাকডুমুরের মতো খসখসে, ডিম্বাকৃতির বিপরীতভাবে বিন্যস্ত। পাতার কিনারা সামান্য খাঁজযুক্ত। পাতা ১০-১২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা এবং ৮-১০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত চওড়া হতে পারে। ফুল ছোট, হলদে ও অল্প রোমযুক্ত। ফলটা হয় মটরদানার সমান। এটি গোলাকার ও ধূসর রঙের। পাকলে বেগুনি বা নীলাভ কালচে রঙের হয়। শীতের শেষে ফুল ধরে এবং এপ্রিল-মে মাসে ফল পাকে। তাই এখন যারা গ্রামে যাবে বেড়াতে, তারা পাকা ফলসা খুঁজতে ভুলবে না কিন্তু।

ফলসার রস থেকে সিরাপও তৈরি হয়। পাকা ফলসা টক হলেও ভিটামিন ‘এ’ ও ‘সি’ আছে অনেক। এই ফলে প্রোটিন, শর্করা, খনিজ, চর্বি, ক্যালসিয়াম ও আয়রন পাওয়া যায়। ফলসা গাছের বাকলের রস জ্বর, আমাশয়ের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।

লেখক : প্রফেসর ও বিভাগীয় প্রধান, উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ,

মুমিনুন্নিসা সরকারি মহিলা কলেজ, ময়মনসিংহ

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com