
শীত মানেই তো বাহারি সবজি আর আয়েশ করে পায়েস খাওয়ার ধুম। তবে নিষেধ থাকার পরও যারা কবজি ডুবিয়ে চেটেপুটে তৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন তাদের আছে বিপদ। মেদ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ইউরিক অ্যাসিড, গ্যাস-অম্বল-বুক জ্বালা; এসব ঝোপ বুঝে কোপটা মারল বলে!
লাল টুকটুকে পাকা টমেটো, চিকন সবুজ কড়াইশুঁটি, শিম, বরবটি, ক্যাপসিকাম, গরবিনী গাজর, তেল চুকচুক বেগুন, সবুজ টুপি পরা লাল-সাদা কচি মুলা, নিরেট নিটোল ফুল আর বাঁধাকপি। আনন্দের পসরা সাজিয়ে হাজির সবাই। বাজারময় রঙের মেলা। কিন্তু আপনার জন্য কোন জিনিসটি সঠিক?
আট থেকে আশি বছরের নারী-পুরুষও আজ ‘ওবেসিটি’ তথা স্থূলতার শিকার। বিভিন্ন রোগ ও মৃত্যুর অন্যতম কারণ এ ওবেসিটি। মেদ ঝরাতে চাই সঠিক পরিমাণে, সঠিক সময়ে সঠিক খাবার। আর বয়সের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে শারীরিক কসরত। সারা দিন না খেয়ে থাকা কিংবা দিনের কোনো একটি মিল বাদ দেওয়ার নাম কিন্তু ডায়েটিং নয়।
ফিরে আসি সবজির বাজারে। ওজন কমাতে চাইলে আলু, রাঙা আলু, কচু, ওল, সজনে শাল, কাঁঠাল বীজ ও কড়াইশুঁটি এড়িয়ে যেতে হবে। আলু আর কড়াইশুঁটির ক্যালরিগত মান একই! সুতরাং গ্রিন ভেজিটেবিল উপকারী ভেবে এক বাটি কড়াইশুঁটি খেয়ে ফেলবেন না। বরং ফুলকপি, বাঁধাকপি, পেঁপে, মুলা, বেগুন, লাউ, শসা, চালকুমড়ার সঙ্গে দিন গুজরান হোক। গাজর, বিট চলতে পারে অল্প পরিমাণে।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত যারা
ডায়াবেটিস আক্রান্তদের জন্য সবরকম সবজিই চলতে পারে। তবে কিছু কম, কিছু বেশি। ডায়াবেটিস হয়েছে মানেই আলু ও মাটির নিচের জিনিস পুরোপুরি বন্ধ এটা ভ্রান্ত ধারণা। ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকলে সারা দিনে আপনি ছোট একটা আলু (৫০ গ্রাম) খেতেই পারেন। কিন্তু আলুভর্তা, আলুভাজি খাওয়া ঠিক হবে না। কাঁচকলা, শিম, ডুমুর, করলা, এঁচড়ের প্রতি নজর দেওয়া উচিত। কলার থোড়, মোচা, সরষে শাক। সঙ্গে চলতে পারে ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, পটোল, কুমড়া, পেঁপে, বিন, সজনে ডাঁটা, বেগুন, চিচিঙ্গা, মুলা, ঝিঙে, লাউ, চালকুমড়া, শসা।
ইউরিক অ্যাসিড
রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বেশি থাকলে সামুদ্রিক মাছ, মাংস, কলিজা, মাছের ডিম খাওয়া চলবে না। মুরগি, দুই কেজির ওপর বড় মাছ, যে কোনো ডাল, মাশরুম, পালংশাক, ফুলকপি, বিন-বরবটি না খাওয়াই ভালো। তবে দুধ, দুগ্ধজাত, ডিম, ফল, বাদাম, সবজি খেতে পারেন। হাই ব্লাডপ্রেশারের সঙ্গে (তৈলের আধিক্য) সবজির সরাসরি কোনো সম্পর্ক নেই।
লেখক : এডিটর ইন চিফ, তিলোত্তমা ও স্বাস্থ্যসেবা