রীতা ভৌমিক
প্রকাশ : ১৩ মার্চ ২০২৩, ১০:০২ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

নাসার রবার্ট এইচ গডার্ড পুরস্কারজয়ী মনীষা

নাসার রবার্ট এইচ গডার্ড পুরস্কারজয়ী মনীষা

বাংলাদেশের বিজ্ঞানী মনীষা দাস চৈতী। যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা থেকে তরুণ শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত ‘ল্যান্ডস্যাট ক্যাল/ভাল’ দলের হয়ে রবার্ট এইচ গডার্ড পুরস্কার ২০২২ পেয়েছেন। লিখেছেন রীতা ভৌমিক

নরসিংদী জেলার রায়পুরা থানার তাত্তাকান্দা গ্রামের মেয়ে মনীষা দাস চৈতী। তার বেড়ে ওঠা নরসিংদী শহরে। নরসিংদী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১০ সালে এসএসসি পাস করেন। খুলনা ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজি (কুয়েট) থেকে ২০১৭ সালে স্নাতক করেন। স্কলারশিপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ডাকোটা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে ২০১৯ সালে বৈদ্যুতিক প্রকৌশলে এমএস করতে যান। সেখানে তিনি ইই বিভাগে ইমেজ প্রসেসিং ল্যাবে স্নাতক গবেষণা সহকারী হিসেবে যোগদান করেন। তার গবেষণা প্রকল্পটি ইউএসজিএস ইআরওএস অর্থায়নে চলছে। এর সঙ্গে মার্কিন সরকারি সংস্থা এবং স্যাটেলাইট গবেষণাও সম্পৃক্ত রয়েছে। এ গবেষণা প্রকল্পের অংশ হিসেবে এসডিএসইউতে ল্যাবে ইমেজ প্রসেসিংয়ের অংশ হিসেবে মনীষা ল্যান্ডসেট ক্যালিব্রেশন/ভ্যালিডেশন টিমের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তিনি একটি অ্যাবসলিউট ক্যালিব্রেশন মডেল তৈরির মাধ্যমে এ প্রকল্পে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এটি সর্বোচ্চ স্তরে সক্রিয় ল্যান্ডস্যাট স্যাটেলাইট ডেটার গুণমান বজায় রাখতে এবং ল্যান্ডস্যাট স্যাটেলাইট মিশনের কর্মক্ষমতা পরিমাপ করার ক্ষেত্রে ক্যাল/ভাল টিমের সক্ষমতা বাড়িয়েছে। ল্যান্ডস্যাট স্যাটেলাইট ডেটা পণ্যটি নগর পরিকল্পনা থেকে শুরু করে জলবায়ু পরিবর্তন পর্যবেক্ষণসহ বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন খাতে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া তিনি রচেস্টার ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে পিএইচডি করছেন।

এ সম্পর্কে ইউএসজিএস ইআরওএস ক্যাল/ভ্যাল-এর ম্যানেজার কোডি অ্যান্ডারসন বলেন, ‘এমন অসাধারণ কাজের জন্য অত্যন্ত পরিশ্রমী, নিবেদিত, বড় ও আত্মবিশ্বাসী দলের প্রয়োজন, ল্যান্ডস্যাট ক্যাল/ভ্যাল তেমনই একটি দল। আমি অভিভূত এই দলে বিশ্বের কয়েকজন সেরা বিজ্ঞানী রয়েছেন। যারা তাদের অসাধারণ মেধা এবং জানার গভীরতাকে কাজে লাগিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন।’ তিনি আরও জানান, দলটি পরবর্তী সময়ে ল্যান্ডস্যাট নেক্সট মিশনের জন্য পরিকল্পনা করছে।

এমন মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কার প্রাপ্তিতে মনীষা দাস চৈতী বলছিলেন, ‘এটি আমার জন্য অত্যন্ত আনন্দের ও গর্বের। আমাদের কাজকে মূল্যায়ন করে নাসা এ পুরস্কার দিয়েছে। এ পুরস্কার সামনের দিনগুলোতে আমাকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে।’ এ ছাড়াও তিনি মহাকাশ বিজ্ঞানে আগ্রহী দেশের শিক্ষার্থীদের কথা তুলে ধরে বলেন, ‘আমার এ অর্জন বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদেরও মহাকাশবিষয়ক পড়াশোনায় অনুপ্রেরণা জোগাবে। এখানে আসতে হলে স্নাতকের গবেষণা পত্রটি সঠিকভাবে তৈরি করতে হবে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এটি কাজে লাগবে। স্নাতক সম্পন্ন হলেই সময় নষ্ট না করে জিআরই, আইইএলটিএস দিতে হবে। যেহেতু আমাদের দেশের গবেষণা কর্মকাণ্ড অন্যান্য দেশের থেকে পিছিয়ে রয়েছে। সেজন্য নিজেকে এগিয়ে নিতে এভাবেই তৈরি করতে হবে। উচ্চশিক্ষা এবং গ্রেড স্কুলগুলোতে নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা খুবই কম দেখা যায়।

মনীষার বাবা শত্রুঘ্ন চন্দ্র দাস ছিলেন একজন ব্যাংকার। ২০১২ সালের ৬ অক্টোবর বাবাকে হারান তিনি। ওই বছরই তিনি নরসিংদী সরকারি কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। বাবা না থাকার অভাব কখনো অনুভব করতে দেননি মা রীতা দাস। মায়ের অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতায় তিনি নিজ লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছেন। তিন বোনের মধ্যে মনীষা দাস চৈতী ছোট। বড় দুই বোন বাংলাদেশে প্রথম শ্রেণির সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কাপ্তাইয়ের লোকালয়ে ১৪ ফুট দৈর্ঘ্যের অজগর

সরকারপ্রধানের ইচ্ছায় এদেশে আইনের প্রয়োগ হয়: রিজভী

শাকিবের ‘তুফান’-এ  চঞ্চল চৌধুরী

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে শিল্পী সমিতির নির্বাচনে জয়ীদের সাক্ষাৎ

বিএনপি নেতাদের মুক্তির দাবিতে নয়াপল্টনে মিছিল

ওয়ালটন প্লাজায় ইন্টার্ন পদে চাকরি, কর্মস্থল ঢাকা

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের হারিয়ে লিগ শিরোপা নিশ্চিত ইন্টারের

স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ

বুধবার যেসব এলাকায় গ্যাস থাকবে না

বৃষ্টি প্রার্থনায় নামাজে হাউমাউ করে কাঁদলেন তারা

১০

২০০ দিনে গড়াল গাজা যুদ্ধ

১১

কুমিল্লায় সড়ক দুর্ঘটনায় যুবক নিহত

১২

রাজধানীর শ্যামবাজার ঘাটে লঞ্চে আগুন

১৩

বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদন

১৪

কয়রায় নীতি সমস্যা বিশ্লেষণ ও সমাধান কৌশলবিষয়ক প্রশিক্ষণ

১৫

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরে ৩ দিন আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

১৬

বেনামী পার্সেলে রঙিন প্যাকেটে মিলল কোটি টাকার মাদক

১৭

অভিজ্ঞতা ছাড়া চাকরি দিচ্ছে ব্র্যাক ব্যাংক, আবেদন করুন দ্রুত

১৮

উদ্ভাবক ও গবেষক গৌতম কুমার রায়ের কাজের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি

১৯

আন্তর্জাতিক কপিরাইট দিবস উদযাপন করল বাংলাদেশ কপিরাইট অফিস

২০
*/ ?>
X