অনুদানের ছবির বাজেট বৃদ্ধির ঘোষণা প্রধানমন্ত্রীর

ঢাকা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২১’ প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
ঢাকা বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২১’ প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পিআইডি

২০২১ সালে চলচ্চিত্র শিল্পে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখা গুণী শিল্পীদের হাতে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার তুলে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে এ পুরস্কার তুলে দেন তিনি। সে সময় তিনি জানান, চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি অনুদান আগামী বাজেটেই বৃদ্ধি করা হবে।

প্রতিবছর সৃজনশীল ও মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র নির্মাণে অনুদান দেয় সরকার। স্বল্পদৈর্ঘ্যে ২৫ লাখ এবং পূর্ণদৈর্ঘ্যে ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত অনুদান দেওয়া হয়। আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে অনুদানের অর্থের পরিমাণ বাড়ানোর ঘোষণা দিলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘করোনাকালীন অর্থনৈতিক যে মন্দা এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে সবকিছুর দাম বেড়ে গেছে। মূল্যস্ফীতি দারুণভাবে বেড়ে গেছে। সেখানে এ মুহূর্তে সরকার যে অনুদান দিচ্ছে, এটি একটি পূর্ণাঙ্গ চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য যথেষ্ট নয়। এ অনুদান আরও বাড়াতে হবে। আমি আগামী বাজেটে উদ্যোগ নেব।’

শেখ হাসিনার ভাষ্য, ‘বাস্তবতা হলো ২৫ লাখ টাকা একটি সিনেমার জন্য যথেষ্ট নয়। বর্তমানে পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমার জন্য ২৫ লাখ, স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমার জন্য ২০ লাখ টাকা দেওয়া হয়। এটি অনেক কম। এটি হয় না। একটি ভালো বাজেট হলে একটি ভালো সিনেমা নির্মাণ করা সম্ভব বলে আমি করি।’

তরুণ প্রজন্মের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি দেখেছি সবার মাঝে আলাদা মেধা ও চিন্তাশক্তি আছে। আর্টিস্টিক ও শৈল্পিক মেধা আছে। তাদের মাধ্যমে জীবনধর্মী যেসব সিনেমা তৈরি হয়, সেগুলো মানুষকে আকর্ষিত করে।’

শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে দ্রুত বিএফডিসি ভবন নির্মাণকাজ শেষ করার তাগিদ দেন। সেইসঙ্গে চলচ্চিত্র শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্টে শিল্পীদের তাদের আয় থেকে একটি অংশ জমা দেওয়ার আহ্বান জানান।

এদিকে ২০২১ সালে চলচ্চিত্রের জন্য ২৭ ক্যাটাগরিতে ৩৪টি পুরস্কার দেওয়া হয়। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন হাসানুল হক ইনু। সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

প্রধানমন্ত্রী শিল্পীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। পাশাপাশি আগামীতে আরও বিস্তৃত পরিসরে অনুষ্ঠান আয়োজনের তাগিদ দেন। এবার যৌথভাবে আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন ইলিয়াস কাঞ্চন ও ডলি জহুর। আসরে যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র নির্বাচিত হয়েছে ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ ও ‘নোনাজলের কাব্য’। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পরিচালক হয়েছেন রেজওয়ান শাহরিয়ার সুমিত (নোনাজলের কাব্য)। শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার জিতেছেন যৌথভাবে মো. সিয়াম আহমেদ (মৃধা বনাম মৃধা) ও মীর সাব্বির মাহমুদ (রাতজাগা ফুল)। শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীও নির্বাচিত করা হয়েছে যৌথভাবে। তারা হলেন আজমেরী হক বাঁধন (রেহানা মরিয়ম নূর) ও তাসনোভা তামান্না (নোনাজলের কাব্য)। এবারের আসরে শ্রেষ্ঠ পরিচালক ও শ্রেষ্ঠ অভিনেত্রীসহ সাতটি পুরস্কার জিতে নিয়েছে ‘নোনাজলের কাব্য’ চলচ্চিত্রটি। পুরস্কারপ্রাপ্ত অন্যরা হলেন আকা রেজা গালিব, কাওসার চৌধুরী, ফজলুর রহমান বাবু, শম্পা রেজা, জয়রাজ, মিলন ভট্টাচার্য্য, আফিয়া তাবাসসুম, সুজেয় শ্যাম, মুহিন, চন্দনা মজুমদার, গাজী মাজহারুল আনোয়ার, তৌকীর আহমেদ, সামির আহমেদ, শিহাব নূরুন নবী, সৈয়দ কাশেফ শাহবাজি, সুমন কুমার সরকার, মাজহারুল ইসলাম রাজু, শৈব তালুকদার, ইদিলা কাছরিন ফরিদ, মো. ফারুখ, মো. ফরহাদ রেজা মিলন জান্নাতুল মাওয়া ঝিলিক।

পুরস্কার প্রদানের পাশাপাশি ছিল বিনোদন অঙ্গনের মানুষের পরিবেশনায় সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com