গাছ কাটার প্রতিবাদে ঘেরাও কর্মসূচি পুলিশি বাধায় পণ্ড

গাছ কাটার প্রতিবাদে ঘেরাও কর্মসূচি পুলিশি বাধায় পণ্ড

ধানমন্ডির সাতমসজিদ সড়কে গাছ রক্ষার দাবিতে ঢাকা দক্ষিণ সিটির নগর ভবন ঘেরাও কর্মসূচি পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়েছে। কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে গাছ কাটা বন্ধে সুস্পষ্ট কোনো আশ্বাস পাননি বলে ঘেরাও কর্মসূচিতে যান আন্দোলনকারীরা। তা না পেরে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দোয়েল চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে নগর ভবন ঘেরাও করতে যান পরিবেশবাদীরা। পদযাত্রায় তাদের সঙ্গে অংশ নেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষও। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে মিছিলটি বঙ্গবাজার মোড়ে এনেক্সকো টাওয়ার মার্কেটের সামনে পৌঁছালে বাধা দেয় পুলিশ। তখন আন্দোলনকারীরা সড়কে অবস্থান নেন এবং দক্ষিণ সিটির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসকে এসে কথা বলার দাবি জানান। প্রায় ৪৫ মিনিট পরে তাদের কাছে যান দক্ষিণ সিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান এবং প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিনসহ কয়েক কর্মকর্তা।

আন্দোলনকারীদের মিজানুর রহমান জানান, মেয়র পূর্বনির্ধারিত সভায় ব্যস্ত থাকায় আসতে পারেননি বলে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, দক্ষিণ সিটির পক্ষ থেকে গাছ লাগানো হচ্ছে। নগর পরিকল্পনাবিদ, পরিবেশবিদসহ সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ নিয়েই কাজ করা হচ্ছে। ওই কর্মকর্তা বলেন, সুনির্দিষ্টভাবে দাবিগুলো দেন। মেয়রের কাছে উপস্থাপন করব। মেয়রের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সময় চান প্রধান নির্বাহী। তার আশ্বাসের পর পরিবেশবাদিরা সেখান থেকে চলে যান।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, জবাবদিহির জায়গায় মেয়র একেবারেই প্রস্তুত নন। অজনপ্রিয় সিদ্ধান্তের পক্ষে দাঁড়ানোয় ওনার কাছে বলার মতো কোনো যুক্তি নেই। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।

উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ নূর বলেন, কর্মসূচির খবর পেয়ে সকাল থেকেই ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। উন্নয়নের দোহাই দিয়ে নির্বিচারে প্রাণপ্রকৃতি-পরিবেশ ও বৃক্ষ হত্যা করা হচ্ছে।

পরিবেশবাদীদের দাবিগুলো হলো সাতমসজিদ সড়কের গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে। কেটে ফেলা গাছের স্থানে দেশি প্রজাতির গাছ লাগাতে হবে। ‘উন্নতমানের দ্রুত বর্ধনশীল’ গাছ লাগানোর নতুন প্রকল্প গ্রহণের নামে বাণিজ্য বন্ধ করতে হবে। বৃক্ষ ও নগরবাসীবান্ধব সুনির্দিষ্ট নীতিমালা গ্রহণের মাধ্যমে নগরের গাছ ও সবুজ বলয় সুরক্ষা করতে হবে। উন্নয়নের নামে যখন-তখন গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে। নগর উন্নয়নে প্রকৃতিভিত্তিক পরিকল্পনাকে গুরুত্ব দিতে হবে।

সাতমসজিদ সড়ক গাছ রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক আমিরুল রাজীব বলেন, কর্মকর্তারা গতানুগতিক উত্তর দিয়ে থেকে চলে গেছেন। দাবির বিষয়ে কবে সিদ্ধান্ত নেবেন, তাও বলেননি।

এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি নিয়োগপ্রাপ্ত ঠিকাদার সাতমসজিদ সড়কের গাছ কাটা শুরু করলে স্থানীয় এলাকাবাসী, পরিবেশ ও সংস্কৃতিকর্মীরা সম্মিলিতভাবে ‘সাতমসজিদ সড়ক গাছ রক্ষা আন্দোলন’-এর ব্যানারে মানববন্ধন করেন। সম্মিলিত প্রতিবাদের মুখে প্রায় তিন মাস গাছ কাটা বন্ধ থাকলেও ১ মে আবার গাছ কাটা শুরু হয়।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com