
শাল-গজারির বনে ঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের চারণভূমি টাঙ্গাইলের সখীপুর। যেদিকে চোখ যায় বিস্তীর্ণ জায়াগাজুড়ে শুধু শাল-গজারির বন। সামাজিক বনায়নের এসব বন পুড়ছে আগুনে। এতে পুড়ে ছাই হচ্ছে নানা জাতের গাছ। আগুনের কারণে এ অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য হুমকির সম্মুখীন হলেও এ ধরনের ঘটনা রোধে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যাচ্ছে না বন বিভাগকে।
গতকাল শুক্রবার সরেজমিন দেখা যায়, উপজেলার কালীদাস, কালিয়ানপাড়া, তক্তারচালা, দেওদীঘি, কচুয়া এলাকায় বনে আগুন জ্বলছে। বাতাসের কারণে এ আগুন ছড়িয়ে পড়ছে গভীর থেকে গভীরে। ফলে বনের ভেতরে থাকা অনেক পশুপাখি কীটপতঙ্গ মারা যাচ্ছে। আবার নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য অনেক পশু বাধ্য হচ্ছে লোকালয়ে আসতে।
স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছর বসন্তে এ ঘটনা ঘটে। বনে অনেকেই মাদক সেবন করেন। তাদের কারণে আগুন লাগে। অন্যদিকে পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগান বন বিভাগের কিছু অসাধু কর্মচারী। আগুন দেওয়ার ফলে বনের ছোট গাছ পুড়ে যায়। প্রতিবছর সেখানে আগুন দিলে নতুন করে কোনো গাছ বেড়ে উঠতে পারে না। তবে এ বিষয়ে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না বন বিভাগের কর্মকর্তাদের।
কালিয়ানপাড়া গ্রামের হাসিবুল আলম বলেন, বসন্তের এ সময়ে প্রতিবছর বনে আগুন দেয় কিছু অসাধু ব্যক্তি। আগুন নেভানোর জন্য বনের লোকজনকে আসতে দেখিনি কখনো। বন বিভাগের কিছু অসাধু লোক আগুন লাগানোর সঙ্গে যুক্ত। বন ধ্বংস করে এখানে ঘরবাড়ি তুলে দিতে পারলে তাদের লাভ।
সরকারি মুজিব কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞানের অধ্যাপক সুনির্মল চন্দ্র বসু বলেন, বনে এভাবে আগুন দিলে প্রকৃতি হুমকির মুখে পড়ে। হুমকিতে পড়ে আমাদের অস্তিত্বও। দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
বহেড়াতৈলের রেঞ্জ কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, বনে আগুন দেওয়া অপরাধ। আগুন দেওয়ার সঙ্গে বন বিভাগের কেউ জড়িত নয় দাবি করে তিনি বলেন, বনে আগুন দেওয়ার সঙ্গে বন বিভাগের কেউ জড়িত নন। কে কখন বনে আগুন দিচ্ছে, তা শনাক্ত করা কষ্টসাধ্য। তবু তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।