রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শহীদ হবিবুর রহমান হলের এক শিক্ষার্থীকে মারধর করে হল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক মো. মনিরুল ইসলাম স্বপনের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ফয়সাল আহম্মেদ নগরীর মতিহার থানায় অভিযোগ করেছেন। লিখিত অভিযোগ অনুযায়ী ওই ছাত্রলীগ নেতা গত রোববার
২০-২৫ জনকে সঙ্গে নিয়ে তার কক্ষে এসে বলেন, ‘তোকে না রুম থেকে বের হয়ে যেতে বলেছিলাম? তুই এই রুমে এখনো কী করিস? হল কি তোর বাপের? আমার এই ব্লকে থাকতে হলে টাকা-পয়সা দিয়ে থাকতে হবে।’
ফয়সাল আহম্মেদ ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। শহীদ হবিবুর রহমান হলে তার রুম নম্বর ৪০৪। মনিরুল ইসলাম স্বপনের নাম উল্লেখসহ ২০-২৫ জনকে অভিযুক্ত করেছেন তিনি।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, ‘গত ১২ মার্চ রাত সাড়ে ৮টার দিকে হলের ৪০৪ নম্বর কক্ষে মনিরুল ইসলাম এসে তাকে বলেন, ‘তুমি এখন রুম থেকে বের হয়ে চলে যাও, না গেলে তোমাকে প্রাণে মেরে ফেলব। তোমাকে বাঁচানোর মতো কেউ নেই।’ এরপর অন্য একটি ছেলের বিছানাপত্র তার কক্ষে রেখে চলে যান। পরে গত রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে আবারও আসেন তিনি (মনিরুল ইসলাম)। এ সময় তার সঙ্গে ২০-২৫ জন আসেন। তারা ফয়সালের পোশাক ধরে কক্ষ থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করার চেষ্টা করেন। বের হতে না চাইলে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করেন। মনিরুল ইসলাম তার ডান হাতে লাঠি দিয়ে সজোরে আঘাত করেন। পরে তার বিছানাপত্র বের করে বাইরে ফেলে দেন।’
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে মনিরুল ইসলাম স্বপন বলেন, ‘আমি কাউকে মারধর করিনি। কারও রাজনৈতিক হিংসা থেকে এসব অভিযোগ তোলা হচ্ছে। অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’
ফয়সালের রুমে অন্যজনের বিছানাপত্র রাখার বিষয়ে মনিরুল ইসলাম স্বপন বলেন, ওই ছেলে হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমানের (অপু) মাধ্যমে উঠেছে। হয়তো টাকা-পয়সা দিয়েছে। তারা অভিযোগ করেছে, তদন্ত হোক। এ ঘটনার পর আমি নিজেও থানায় মানহানির অভিযোগ করব। আশিকুর রহমানকে (অপু) একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেনি।
মতিহার থানার ওসি মো. হাফিজুর রহমান বলেন, ‘এক শিক্ষার্থীর অভিযোগ পেয়েছি। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ ঘটনা হওয়ায় আমরা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে। আমরাও তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জেনেছি। ওই কক্ষের সমস্যারও সমাধান করেছি। ফয়সাল আহমেদের রুমে যাকে জোর করে তোলা হয়েছে, তাকে তার নির্ধারিত সিটে চলে যাওয়ার জন্য বলেছি। তবে মারধরের ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে তিনি বলেন, আমার কাছে এ ঘটনায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। ফলে আমি অফিসিয়াল কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছি না।