সুশোভন অর্ক
প্রকাশ : ১০ এপ্রিল ২০২৩, ০৮:২৮ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

কর্মচারীদের নিয়ে ভাবছে না কেউ

কর্মচারীদের নিয়ে ভাবছে না কেউ

বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন হাজারো ব্যবসায়ী। অনেক ব্যবসায়ী সর্বস্ব হারিয়ে হয়েছেন নিঃস্ব। তবে এর চেয়েও বেশি ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে পড়েছেন বঙ্গবাজারের কর্মচারীরা। ঈদ সামনে রেখে তাদের যে স্বপ্ন ছিল, তা পরিণত হয়েছে দুঃস্বপ্নে। আগুনের দুর্ঘটনার পর ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসন এবং ক্ষতিপূরণের জন্য বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান উদ্যোগ নিলেও কর্মচারীদের বিষয়ে ভাবছেন না কেউ।

কর্মচারীরা বলছেন, একজন ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া মানে তার প্রতিষ্ঠানের সব কর্মচারীর অনিশ্চিত জীবন। কারণ মালিকের বেতনের ওপরই তাদের সবকিছু। এদিকে ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাদের নিজেদেরই এখন কিছু নেই। কীভাবে কী করবেন বুঝতে পারছেন না। এর মধ্যে কর্মচারীদের বেতন দেওয়া তো দুঃসাধ্য। সরেজমিন বঙ্গবাজারে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মালিক-কর্মচারীর সঙ্গে কথা বলে এমন চিত্রই মিলেছে।

বঙ্গবাজারে আগুনের পর বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান সাহায্য-সহযোগিতার জন্য হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের জন্য খোলা হয়েছে ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। ওই অ্যাকাউন্টে জমা হওয়া অর্থ প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। এ ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের একটি তালিকা করা হচ্ছে। তালিকা তৈরি আর ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করে তাদের অর্থ বুঝিয়ে দেওয়া হবে।

তবে এই প্রক্রিয়ার মধ্যে কর্মচারীরা কীভাবে তাদের আর্থিক পরিস্থিতি সমন্বয় করবেন সে ব্যাপারে স্পষ্ট কোনো ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। বঙ্গবাজারের আল কারীম গার্মেন্টসের কর্মচারী হানিফ মিয়া জানান, একটা দোকানের পেছনে অনেক কর্মচারীর অবদান থাকে। যারা দোকানে কাজ করেন তারা আছেন। যাদের কারখানা আছে সেসব কারখানার কর্মচারীরা আছেন। ৫ হাজার দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া মানে লাখ লাখ কর্মচারী ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া।

তিনি বলেন, আগুন লাগার ঘটনার দিন থেকে প্রতিদিনই আসি। কবে সবকিছু ঠিক হবে জানি না। আমার দোকানের মালিকের যা ছিল তা সব পুড়ে গেছে। এখন আমরা কীভাবে ঈদ পালন করব, আর কীভাবে সংসার চালাব তাই জানি না। ভাইয়ের কাছ থেকে ১৫০০ টাকা ধার করে দুদিন ধরে চলছি।

আল্লাহ মহান গার্মেন্টসের মালিক মো. মাইদুল ইসলাম বলেন, ৫ হাজার ব্যবসায়ীর সঙ্গে ১ লাখ পরিবার যুক্ত। যে কর্মচারী আমার দোকানে থাকে তার মাথায় হাত। যে আমার শার্টটা বানায় তার মাথায় হাত। তারা ভাবছেন, আমার মহাজনের এই অবস্থা আমার কী হবে। আমাদের অবস্থা কী হবে, সেটাই বুঝতে পারছি না। কর্মচারীদের কীভাবে সাহায্য করব, সেটাই ভাবছি। আমরা নিজেরাই এখন সাহায্য চাচ্ছি।

মুনতাহা ফ্যশনের মালিক মো. জহিরুল ইসলাম সুমন জানান, তার ৮ জন কর্মচারী। আগুনের ঘটনায় তার ৩০ থেকে ৪০ লাখ টাকার মালপত্র নষ্ট হয়েছে। তিনি বলেন, আমার কর্মচারীরা আমাকে ফোন দেয়। কিন্তু কিছু বলতে পারে না। আমিও কিছু বলতে পারি না। যদি দ্রুত দোকান বসানোর একটা ব্যবস্থা হয় তাহলে হয়তো কিছু করা সম্ভব হবে।

বঙ্গবাজারের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নেওয়ার কাজ পাওয়া পারভেজ আয়রন স্টোরের মালিক মো. পারভেজ জানান, তারা চেষ্টা করছেন দ্রুত কাজ সম্পন্ন করার জন্য। শ্রমিকরা রাত-দিন পরিশ্রম করছেন। তিনি বলেন, মাঝে মধ্যে কাজ করতে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে। তবে দু-এক দিনের মধ্যেই আমরা সবকিছু সরিয়ে ফেলতে পারব বলে আশা রাখি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রাজধানীতে ৩ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

ফরিদপুরে দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ১২ : পুলিশ

তাপমাত্রা নিয়ে নতুন দুঃসংবাদ আবহাওয়া অফিসের

বুধবার গ্যাস থাকবে না যেসব এলাকায়

কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য হ্যাটট্রিক পুরস্কার পেলেন এসি পরশুরাম জোন

প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন

বুধবার বন্ধ রাজধানীর যেসব মার্কেট

কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

২৪ এপ্রিল : নামাজের সময়সূচি

রানা প্লাজা ধস : বিচার ও পুনর্বাসনের অপেক্ষায় ভুক্তভোগীরা

১০

চবিতে নতুন ৫ জন সহকারী প্রক্টর নিয়োগ

১১

পরনের কাপড় ছাড়া দরিদ্র ৫ পরিবারের সর্বস্ব পুড়ে ছাই

১২

মিষ্টি খেতে বছরজুড়ে থাকে ভিড়

১৩

জ্ঞান ফেরেনি মায়ের, ছেলের কবরের পাশে পায়চারি করছেন বাবা

১৪

খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে ৬ বছরের শিশুকে ধর্ষণ

১৫

এবার চিপকেও ব্যর্থ মোস্তাফিজ

১৬

বিএসএমএমইউর উপ-উপাচার্যের দায়িত্ব নিলেন ডা. আতিকুর

১৭

চাঁদপুরে টাউন হল মার্কেটে আগুন

১৮

নারী বিশ্বকাপের ভেন্যু দেখতে সিলেটে আইসিসির প্রতিনিধি দল

১৯

সুদের ওপর কর অব্যাহতি পেল অফশোর ব্যাংকিং

২০
*/ ?>
X