শরীয়তপুরের ডামুড্যায় যৌতুকের জন্য নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সালমা বেগম ও তার চার বছরের সন্তান আরিফা। গত বৃহস্পতিবার উপজেলার শিধলকুড়া ইউনিয়নের আদাশন গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ওই নারীকে গুরুতর আহত অবস্থায় ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। তার সঙ্গে আছে শিশু আরিফাও।
সালমা বেগম ও তার ভাবি অযুফা বেগম জানান, প্রায় ১৮ বছর আগে নয়ন সিকদারকে পালিয়ে বিয়ে করেন সালমা। প্রথমে সালমার পরিবার এ বিয়ে মেনে না নিলেও পরে মেনে নেয়। এরপর থেকেই শুরু হয় নয়ন ও তার পরিবারের যৌতুকের জন্য চাপ। ছয় মাস পরপর বিভিন্ন অজুহাতে শ্বশুরবাড়ি থেকে টাকা আদায় করতেন নয়ন। সালমার পরিবার টাকা দেওয়া বন্ধ করলে তার ওপর নির্যাতন চালানো হতো। একপর্যায়ে সালমার বাবা-মা মারা যাওয়ায় টাকা দেওয়া বন্ধ হয়ে যায়। এরই মধ্যে নয়ন সালমাকে না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করে ঢাকায় থাকা শুরু করেন। এমনকি সালমার সংসার চালাতে বাপের বাড়ির সম্পদ বিক্রি করে ২ লাখ টাকা দাবি করেন।
সালমা এ টাকা দিতে রাজি না হলে নয়ন ও তার মা মির্জাবান বিবি তাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারধর করেন। এ সময় আরিফা এগিয়ে এলে তাকেও গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলা হয়। একপর্যায়ে নয়ন হাতে থাকা চাবি দিয়ে সালমার ডান চোখ উপড়ে ফেলার চেষ্টা করলে চাবির এক অংশ চোখের মধ্যে ঢুকে যায়। এ সময় সালমার চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন এবং তাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করেন। এ ঘটনার পর থেকে নয়ন পলাতক।
মোবাইল ফোনে নয়নের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সালমা আমার বিরুদ্ধ মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে। সে আমাকে সবসময় অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে। আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। সে আমাকে মারতে এলে আমিও তাকে মেরেছি। এ সময় দ্বিতীয় বিয়ের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, আমার নতুন বউ আমাকে কামাই করে খাওয়ায়। এ বিষয়ে ডামুড্যা থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।