হ্যাকারের খপ্পরে বিআরটিএ ডেসকোর ৩ কোটি টাকা

হ্যাকারের খপ্পরে বিআরটিএ ডেসকোর ৩ কোটি টাকা

প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়া প্রতিষ্ঠান সিএনএসের সার্ভার হ্যাক করে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ) এবং ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (ডেসকো) প্রায় ৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে একটি চক্র।

র‌্যাব জানিয়েছে, চক্রটি গাড়ির মালিকানা পরিবর্তন, লাইসেন্স নবায়ন ও বিদ্যুৎ বিল বাবদ গ্রাহকরা যে অর্থ পরিশোধ করত তা সরকারের কোষাগারে জমা না দিয়ে নিজেরা লোপাট করত। চক্রটি বিআরটিএর ৪০০ গ্রাহকের ১ কোটি ২০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। এ ছাড়া গত বছর ডেসকোর ওয়েবসাইট হ্যাক করে প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।

চক্রটির মূলহোতাসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গ্রেপ্তাররা হলো হোতা শাহরিয়ার ইসলাম, আজিম হোসেন, শিমুল ভূঁইয়া, রুবেল মাহমুদ, ফয়সাল আহাম্মদ ও আনিচুর রহমান। গত রোববার রাতে রাজধানীর মিরপুর, কাফরুল ও গাজীপুর সদরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, সিম কার্ড, পেনড্রাইভ, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই, সরঞ্জামসহ ১ কোটি ৮৯ লাখ টাকা জব্দ করা হয়।

গতকাল সোমবার কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি জানান, মোবাইল ব্যাংকিং হিসাবে গরমিল পেয়ে গত ১০ মে র্যাবের কাছে অভিযোগ করে সিএনএস লিমিটেড বাংলাদেশ। র্যাবের তদন্তে হ্যাকের বিষয়টি ধরা পড়ে।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে র্যাব মুখপাত্র বলেন, শাহরিয়ার চক্রের মূলহোতা। সে সিএনএসর ওয়েবসাইটের পেমেন্ট গেটওয়ে হ্যাক করে। এরপর দালালদের মাধ্যমে গাড়ির গ্রাহক সংগ্রহ করে। গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সার্ভারে সব তথ্য আপডেট করে দিত। গাড়ির মালিকানা পরিবর্তন, ফিটনেস, ট্যাক্স টোকেন, গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ফি এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক ফিসহ বিভিন্ন কাজে অর্থ সংগ্রহ করত এবং তাদের অর্থ পরিশোধের মানি রিসিট দিত। এরপর গ্রাহক ওই মানি রিসিট দিয়ে বিআরটিএর সংশ্লিষ্ট কাজ সম্পাদন করত। সিএনএসর ওয়েবসাইটে এসব ট্রানজেকশনের পেমেন্ট স্ট্যাটাস পেইড দেখালেও মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্টে টাকা জমা হতো না। এসব টাকা চক্রের সদস্যরা আত্মসাৎ করত।

তিনি জানান, এভাবে তারা গত ১২ এপ্রিল থেকে ১০ মে পর্যন্ত ৩৮৯টি মানি রিসিপ্ট প্রস্তুতের মাধ্যমে সরকারি প্রায় ১ কোটি বিশ লাখ টাকা আত্মসাৎসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হ্যাক করেছে। এ ছাড়া গত বছর শেষের দিকে তারা ডেসকো কোম্পানির ওয়েবসাইট হ্যাক করে ট্রানজেকশন আইডি তৈরি করে মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রায় দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে ডেসকো কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বুঝতে পেরে তাদের ওয়েবসাইটের কিছু পরিবর্তন আনলে এসব পেমেন্ট স্ট্যাটাসে আনপেইড উল্লেখ থাকায় গ্রাহকরা আবারও বিল পেমেন্ট করে।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com