
কাচ্চিতে খাসি বলে ‘কুকুর’ বা অন্য প্রাণীর মাংস খাওয়ানো হচ্ছে—এমন অভিযোগ উঠেছে সুপরিচিত রেস্তোরাঁ সুলতান’স ডাইনের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে চলছে সমালোচনার ঝড়। সেই জেরে গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে সুলতান’স ডাইনে অভিযান চালিয়েছে নিরাপদ খাদ্য এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।
অভিযান চলাকালে টয়লেটের পাশে খাবারসামগ্রী রাখায় তোপের মুখে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। সেইসঙ্গে মাংস সরবরাহকারীর সঙ্গে ফোনে কথা বলে ২৫ কেজি খাসির মাংসে গরমিল পাওয়া যায়। এর ব্যাখ্যা জানতে চেয়ে আগামী সোমবার সকাল ৯টায় ভোক্তা অধিকারের কারওয়ান বাজার অফিসে মাংস সরবরাহকারীসহ সুলতান’স ডাইন কর্তৃপক্ষকে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়।
গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত গুলশান-২-এর সামসুদ্দিন ম্যানশনে সুলতান’স ডাইন শাখায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এর আগে দুপুর ১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ সুলতান’স ডাইনে অভিযান পরিচালনা করে।
সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, কাচ্চির মাংসগুলো চিকন আকৃতির ছিল। খাসির মাংস আসলে চিকন হয় কিনা এবং সুলতান ডাইন’স কর্তৃপক্ষ কার কাছ থেকে মাংস সরবরাহ করে—এসব বিষয়ে তদারকি করতে মাংস সরবরাহকারীকে ফোন করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ ঢাকা জেলা কার্যালয়ের অফিস প্রধান ও সহকারী পরিচালক মো. আবদুল জব্বার মণ্ডল। ফোনালাপে মাংস সরবরাহকারী জানান, সুলতান’স ডাইনকে বৃহস্পতিবার ১২৫ কেজি খাসির মাংস বাকিতে সরবরাহ করা হয়েছে। মাংস প্রসেসিংয়ের সময় সুলতান’স ডাইনের কেউ না থাকলেও সরবরাহের সময় তাদের একজন প্রতিনিধি ছিলেন। তবে ৯ মার্চ কাগজে-কলমে সুলতান’স ডাইন কর্তৃপক্ষ ১৫০ কেজি খাসির মাংস সরবরাহ করে রান্নার জন্য। অসংগতি পেয়ে সুলতান ডাইন’সের সহকারী ব্যবস্থাপক আশরাফ আলমের কাছে বাকি ২৫ কেজি মাংস কার থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে জানতে চান জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের পরিচালক আবদুল জব্বার মণ্ডল।
অভিযানে দেখা যায়, সুলতান’স ডাইনের ফ্রিজে মুরগির মাংস থাকলেও খাসির কোনো মাংস ছিল না। ২৫ কেজি খাসির মাংসের গরমিলের ব্যাখ্যা জানতে চাইলে কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
অভিযান শেষে আবদুল জব্বার মণ্ডল বলেন, কর্তৃপক্ষের বক্তব্যের সঙ্গে মাংস সরবরাহকারীর বক্তব্যে এবং কাগজপত্রের গরমিল পেয়েছি। তারা আপাতত কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি। তাই তাদের আগামী সোমবার ভোক্তার অফিসে এসে এর ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। তারপর যদি কোনো ভুল-ত্রুটি পাই, তখন সুলতান’স ডাইনের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুলতান’স ডাইনের সহকারী ব্যবস্থাপক আশরাফ আলম বলেন, ভোক্তা অধিদপ্তর ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের লোকজন এসেছিলেন। তারা আমাদের কাছে কিছু তথ্য চেয়েছেন, আমরা তা দিয়েছি। এ ছাড়া ভোক্তা অধিদপ্তর আগামী সোমবার আমাদের কিছু কাগজপত্র নিয়ে যেতে বলেছে।