
গাজীপুর সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে সাড়াজাগানো স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের গাড়িবহর দুই ঘণ্টা আটকে রেখে প্রচারে বাধা সৃষ্টি করেছেন নৌকা প্রতীকের কর্মীরা। গাড়ি আটকে তারা নৌকার পক্ষে মিছিল করতে থাকেন। গতকাল সোমবার টঙ্গীর বাকরায় প্রচারে গিয়ে এই বাধার মুখে পড়েন টেবিল ঘড়ি প্রতীকের প্রার্থী। এ সময় মা জায়েদা খাতুনের সঙ্গেই ছিলেন সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হামলা-মামলা করে, গাড়ি আটকে, নির্বাচন থেকে আমার মাকে সরানো যাবে না। প্রতিদিনই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দিয়ে আমার গাড়ি আটকে প্রচারে বাধা দেওয়া হচ্ছে, সময় নষ্ট করা হচ্ছে। অথচ নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আজমত উল্লা খান রাস্তা বন্ধ করে জনসভা করেছেন; কিন্তু সেখানে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা কোনো ব্যবস্থা নেননি।
এর আগে সকালে টঙ্গী স্টেশনরোড থেকে প্রচার শুরু করেন জায়েদা খাতুন। এসব গণসংযোগে টেবিল ঘড়িতে ভোট চেয়ে সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলম বলেন, গাজীপুর সিটির মালিক প্রত্যেক ভোটার। ভোটাররা যা চান, তাই হবে। এখানে আসার পর হাজারো মানুষ আমাদের ঘিরে ধরেছেন। তারা টেবিল ঘড়ি প্রতীকে ভোট দেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন। অনেকেই হুমকি দিচ্ছে, অনেকে বলছে ভোট দিয়ে লাভ কী। আমি তাদের বলেছি, সরকার এবং নির্বাচন কমিশন চাচ্ছে এখানে সুষ্ঠু একটি ভোট যাতে হয়। বাংলাদেশের অনেক জায়গায় ভোটে লাইন হয় না; কিন্তু গাজীপুরে প্রমাণ করে দেব, ২৫ তারিখ লাইন ধরে মানুষ ভোট দেবেন।
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ ২৫ মে। প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিকভাবে আর সাত দিন প্রচার চালাতে পারবেন। এ অবস্থায় জোর প্রচারে ব্যস্ত মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীরা। মেয়র পদে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আছেন নৌকার প্রার্থী আজমত উল্লা খান ও সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা টেবিল ঘড়ির প্রার্থী জায়েদা খাতুন।
এদিকে বিএনপি ঘরনার তরুণ মেয়র প্রার্থী সরকার শাহনুর ইসলাম গতকাল নগরীর ৪৪, ৪৫ ও ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগ করেছেন। এ সময় তিনি বলেন, নির্বাচন যত কাছে চলে আসছে, ততই জটিল মনে হচ্ছে। কেন জানি আওয়ামী লীগের দলীয় লোকজন আমাদের সহজভাবে নিতে পারছেন না। কয়েক জায়গায় আওয়ামী লীগের লোকজন লাঠিসোটা নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করার চেষ্টা করে। পরে পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য আমরাই সরে আসি। একটাই দাবি—ইসি যেন লেভেল প্লেলিং ফিল্ডটা ঠিক রাখে।
বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী গাজী আতাউর রহমান গতকাল সকাল থেকে কোনাবাড়ী, কাশিমপুর, ঝরুনসহ আশপাশের এলাকায় প্রচার চালান। গাজী আতাউর রহমান বলেন, চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্যের কারণে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সবসময় টেনশনে দিনাতিপাত করতে হয়। টপ টু বটম চাঁদাবাজদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থাকায় তাদের বিরুদ্ধে কেউ টুঁ শব্দ করার সাহস পায় না। আমি মেয়র হলে আল্লাহ চায় তো গাজীপুরে চাঁদাবাজি থাকবে না।
জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন গাজীপুরে পুবাইল, মীরের বাজার, ধীরাশ্রমসহ আশপাশের এলাকায় প্রচার চালান। তিনি বলেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন হলেও গ্রামীণ আবহ রয়ে গেছে। আমি নির্বাচিত হলে গ্রামীণ এলাকার উন্নয়ন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করার চেষ্টা করব।