দেশের ৯৭ শতাংশ মানুষ দিনে অন্তত একবার প্রক্রিয়া করা প্যাকেটজাত খাবার গ্রহণ করে। এসব খাবারে রয়েছে মাত্রাতিরিক্ত লবণ। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত লবণযুক্ত খাবার খেয়ে বিশ্বে প্রতিবছর প্রায় ১৯ লাখ মানুষ প্রাণ হারান। গতকাল রোববার দুপুরে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে প্রক্রিয়াজাত প্যাকেটকৃত খাবারে লবণ নিয়ন্ত্রণ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ এবং রিসলভ টু সেইভ লাইভসের (আরটিএসএল) সহযোগিতায় আয়োজিত সভায় সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালের চিফ কনসালট্যান্ট কার্ডিওলজিস্ট অধ্যাপক ফজিলা-তুন-নেসা মালিক। স্বাগত বক্তব্য দেন রোগতত্ত্ব ও গবেষণা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. সোহেল রেজা চৌধুরী।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রেজিস্ট্রার (ক্লিনিক্যাল রিসার্চ) ডা. শেখ মো. মাহবুবুস সোবহান। তিনি বলেন, বাজারে ১ হাজার ৩৯৭ ধরনের প্রক্রিয়াজাত প্যাকেট খাবার পাওয়া গেছে, যার মধ্যে ১০৫ ধরনের খাবার পরীক্ষা করে দেখা যায় ৩৫ দশমিক ২ শতাংশ খাবারে অতিরিক্ত এবং ২৬ দশমিক ৭ শতাংশ খাবারে তুলনামূলক কম লবণ রয়েছে। বাকি ৩৮ দশমিক ১ শতাংশ খাবারে সঠিক মাত্রায় লবণ রয়েছে। উদ্বেগের বিষয়, প্যাকেটের লেবেলে সঠিক তথ্য থাকে না। আবার অনেক কোম্পানি উপাদানের সঠিক মাত্রা লুকিয়ে বাজারজাত করেন।
সভায় বিএসটিআইর ডেপুটি ডিরেক্টর এনামুল হক বলেন, নগরায়নে প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলা কষ্টকর। তাই সচেতন থাকতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক নাজমা শাহীন বলেন, প্রক্রিয়াজাত খাবারে ‘ফ্রন্ট অব প্যাক লেবেলিং’ অর্থাৎ সামনের দিকে পণ্যের খাদ্য উপাদানের তথ্য থাকতে হবে। জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, খাদ্যে লবণ ব্যবহারের পরিমাণ নিয়ে কোনো আইন নেই।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন গ্লোবাল হেলথ অ্যাডভোকেসি ইনকিউবেটরের ক্যান্ট্রি লিড-বাংলাদেশ মুহাম্মদ রুহুল কুদ্দুস, হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার (অব.) অধ্যাপক ডা. ইউনুছুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক খালেদা ইসলাম, বাংলাদেশ ফুড সেফটি অথোরিটির সদস্য অধ্যাপক ড. আব্দুল আলীম, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার (নিউট্রিশন) ফারিয়া শবনব ও ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার (এনসিডি) ডা. ফারজানা আক্তার ডরিন ও জাতীয় পুষ্টিসেবার প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা. ফাতেমা আক্তারসহ আরও অনেকে।